কলকাতা: কয়লাপাচার কাণ্ডে মূল চক্রী অনুপ মাজি ওরফে লালা, বিনয় মিশ্র ও বিকাশ মিশ্রর ৯.২৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এর মধ্যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, জমি, গাড়ি, বেনামে থাকা সম্পত্তি ও কারখানাও রয়েছে। তদন্ত শুরু করার পর কয়লাপাচার কাণ্ডে বড় অঙ্কের টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ইডির তরফে। এর আগে বিনয় মিশ্রের বাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে মোট সাড়ে ১৩ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পিএমএলএ অ্যাক্টে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এই সম্পত্তি ও টাকা। আরো সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। বিনয় মিশ্রকে বারবার তলব করার পরেও হাজির না হওয়ায় এই প্রক্রিয়া। এর আগে কলকাতায় বিনয় বিকাশের কোটি টাকার বাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, কয়লা ও গরু পাচারের ‘লিঙ্কম্যান’ বিনয় মিশ্রের অন্তবর্তী জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির আর্জি খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কয়লা ও গরু পাচারে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই হাইকোর্টে জানিয়েছে, বিনয়ের সঙ্গে প্রভাবশালীদের যোগ রয়েছে। তাই তাঁকে জেরা করা দরকার। অভিযুক্ত বিনয়ের আইনজীবী মারফত জানিয়েছিলেন, তিনি এ দেশের বাসিন্দা নন। তাই তাঁকে ভিডিয়ো কনফারেন্সে শুনানিতে অংশ নিতে দেওয়া হোক।
গরু পাচারকাণ্ড ও কয়লা পাচারকাণ্ডে নাম জড়িয়েছে বিনয় মিশ্রের। অভিযোগ, এই দুই পাচারকাণ্ডে প্রভাবশালীদের কাছে টাকা লেনদেনের অন্যতম মাধ্যম ছিলেন বিনয়। যদিও একাধিকবার তিনি সে সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছেন। তবে একদিকে ইডি যখন তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে, সিবিআইও এফআইআর দায়ের করেছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় তদন্তকারীরা। এরই মধ্যে বিনয় মিশ্রও পাল্টা কলকাতা হাইকোর্টের কাছে আবেদন জানান, এই জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব যেন ভার্চুয়ালি হয়।
প্রসঙ্গত, কয়লা ও গরুপাচার কাণ্ডে পলাতক বিনয় মিশ্র গত বছরই ভারতীয় নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। এর পর প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ ভানুয়াতুর নাগরিকত্ব নেন তিনি।
উল্লেখ্য এর আগে, কয়লা কাণ্ডে (CBI On Coal Smuggling Case) মূল চক্রী অনুপ মাঝি (Anup Majhi) ওরফে লালার ৫০ রকমের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অনুমতি দেয় আসানসোল সিবিআই আদালত (CBI Court)। জমি, বাড়ি-সহ বিভিন্ন সম্পত্তি রয়েছে লালার। এই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ৬৮ জায়গায় সম্পত্তি রয়েছে লালার। পুরুলিয়া, আসানসোল, রানিগঞ্জ, বাঁকুড়া, দুর্গাপুরে এই সম্পত্তি রয়েছে অনুপ মাঝি ওরফে লালার। এর মধ্যে কয়েকশো একর জমি রয়েছে, যেখানে কয়লা খনি বানাতে চেয়েছিলেন তিনি।
অনুপ মাঝির পাশাপাশি কয়লা কেলেঙ্কারিতে সিবিআই-এর নজরে আরও তিন জন। কয়লা পাচার কাণ্ডে এখন সিবিআইয়ের নজরে বিনয় মিশ্র। তাঁর নাম উঠেছে এসেছে গরু পাচারের ক্ষেত্রেও। এই পাচারের মাথা অনুপ মাঝি ওরফে লালা। সামনে আসে খোদ সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েক স্ত্রীর নামও। লার ২৫টি হিসেবের খাতা আসে তদন্তকারীদের হাতে। ২০১৫ সালের ব্যবসার হিসেব খুঁজে পাওয়া যায় সেখানে। কয়লাকাণ্ডে সমান্তরালভাবে তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই ও ইডি।
আরও পড়ুন: চার দিনের দিল্লি সফরে মমতা, আর্থিক প্যাকেজ চেয়ে দেখা করবেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে