কলকাতা: কাঁথি ধর্ষণ মামলায় আরও বিপাকে তৃণমূল ছাত্র নেতা। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে বহাল রেখেই আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চও। সোমবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের রায়, বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চ অভিযুক্তকে আত্মসমর্পণের যে নির্দেশ দিয়েছিল, সেখানে তারা হস্তক্ষেপ করবে না। সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত ওই বেঞ্চে গিয়েই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাতে পারেন বলে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়।
ঘটনার সূত্রপাত গত অক্টোবর মাসে। কাঁথির এক নাবালিকাকে দিঘাতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল ছাত্র নেতার বিরুদ্ধে। নির্যাতিতার বাবার অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করেছেন অভিযুক্ত। এমনকি ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিয়ো ও ছবি দেখিয়ে তাঁকে ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
গত ১০ জানুয়ারি কাঁথি থানায় এই নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার বাবা-মা। তৃণমূল ছাত্র নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেনি। পুলিশি তদন্তে অসন্তুষ্ট হয়ে ফের হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন নির্যাতিতার বাবা-মা। বিচারপতির রাজাশেখর মান্থার এজলাসে মামলা দায়ের হয়। বিচারপতি কাঁথির তদন্তকারী অফিসারকে ভর্ৎসনা করেন। বিচারপতি মান্থা বলেছিলেন, , ‘‘আপনি সঠিক ভাবে তদন্ত করছেন না… । যত দ্রুত সম্ভব তাঁকে গ্রেফতার করুন।’’ কিন্তু এরপরও গ্রেফতার হয়নি অভিযুক্ত। এরপর অভিযুক্তের আইনজীবী ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করেন। আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে তাঁরা প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন।
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। প্রধান বিচারপতির প্রশ্নের মুখে পড়েন মূল অভিযুক্ত। প্রধান বিচারপতি এদিন প্রশ্ন করেন, “২০ জানুয়ারি সিঙ্গল বেঞ্চে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে আপনারা বলেছিলেন, যে অভিযুক্ত আত্মসমর্পণ করবেন, আর এখানে আগাম জামিনের আবেদন করছেন! দুই আদালতে আপনাদের অবস্থান দু’রকম কেন ?” ৩১ জানুয়ারি এই মামলার শুনানি শেষ হয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। তিনি রায় দান স্থগিত রেখেছিলেন। সোমবার ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি ফেরাল সিঙ্গল বেঞ্চেই। উল্লেখ্য, প্রায় এক মাস হতে চলল তৃণমূল ছাত্রনেতাকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।