কলকাতা: ওমিক্রন আতঙ্কের মধ্যেই করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মিলল ফ্রান্সে। এই নতুন ভ্যারিয়েন্টের নাম IHU। ফ্রান্সের এক নাগরিকের শরীরে প্রথম এই ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়, তিনি ক্যামিরুন থেকে এসেছিলেন। সেদেশের একটি সংবাদপত্রে এমনটাই রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। এই মুহূর্তে ফ্রান্সে IHUতে আক্রান্ত ১২ জন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওমিক্রনের থেকে বেশি সংক্রমক IHU।
কী এই IHU?
ওমিক্রনের প্রভাব সবে টের পেতে শুরু করেছে রাজ্য। আক্রান্ত সংখ্যা এক সপ্তাহে চারশো থেকে শুরু করে ৬ হাজারের ঘরে চলে গিয়েছে। হু হু করে বাড়ছে দৈনিক পজিটিভিটি রেট। কলকাতায় সেটি ৩৪ শতাংশ। এইরকম পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়িয়েছে আরও একটি ভ্যারিয়েন্ট। ওমিক্রনের থেকেও শক্তিশালী স্ট্রেনের হদিশ মিলেছে ফ্রান্সে।
IHUএর তথ্য বিশ্লেষণ
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, IHU-তে ৪৬ টি মিউটেশন রয়েছে। এই পর্যন্ত ১২টি IHU কেসের সন্ধান মিলেছে। তবে এই নিয়ে আরও তথ্য বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে বিশেষজ্ঞদের। প্রয়োজন আরও কিছু প্রামাণ্য নথিরও। এটা কত দ্রুত সংক্রামিত হচ্ছে, কতদিনের মধ্যে ছড়াচ্ছে, কবে উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, সেগুলি এখনও পরীক্ষামূলক স্তরেই রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, একটা বিষয় স্পষ্ট। কোভিড এমন একটা ভাইরাস, যার ক্রমাগত মিউটেশন হবে। চিকিৎসক কাজলকৃষ্ণ বণিক বলেন, “এই ভাইরাসটার স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হচ্ছে ঘন ঘন রূপ পরিবর্তন করা। আজকে যাকে IHU বা বি ডট ওয়ান ডট ৬৪০২ ব্যাখ্যা করা হচ্ছে, তারও তথ্য সম্পূর্ণ জানা যায়নি। ফ্রান্সের তরফে রিপোর্ট করা হচ্ছে, ক্যামেরুন একটি ছোট্ট জায়গা, সেখান থেকে একজন নাগরিক এসেছিলেন, যিনি IHU আক্রান্ত। তবে এটাই প্রথম কেস কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। অর্থাৎ বলা যায় না বিশ্বের অন্য কোথাও কেউ এটায় প্রথম আক্রান্ত হননি!” তবে বিশেষজ্ঞের মতে, “এখনই এটা নিয়ে ওতটা চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ এরা দ্রুত রূপ পরিবর্তন করলেও, ফেটালিটি রেট তুলনামূলকভাবে কম। যেখানে ডেল্টার ক্ষেত্রে দেখেছিলাম, সংক্রমণ কম হলেও, জটিলতা বেশি সৃষ্টি করছিল। মৃত্যুর মুখে রোগীকে ঠেলে দিচ্ছিল। ওমিক্রন সেরকম কিছু দেখাতে পারেনি।”
আদৌ কি নতুন ভ্যারিয়েন্ট উদ্বেগের?
বিশেষজ্ঞ কাজলকৃষ্ণ বণিকের আরও আশ্বাসবাণী, “করোনা বা এই জাতীয় ভাইরাসের চরিত্র বিশ্লেষণ করে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের গবেষণাপত্র ঘেঁটে যা দেখেছি, তাতে আমার ধারণা এটা হয়তো শেষের শুরু। আর নতুন করে মারণ ক্ষমতা নিয়ে ভাইরাস জন্মাবে না। তবে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য এই ভাইরাস চরিত্র বদলাবে। ইনফ্লুয়েঞ্জা কিংবা অনান্য ফ্লু ভাইরাস যেমন মানুষের অনিষ্ঠ না করেও টিকে থাকে, আমার ধারণা কোভিড ১৯ নামে করোনা ভাইরাস যে যাত্রা শুরু করেছিল, তা ধীরে ধীরে এই পথেই যাবে। তবে আমাদের আরও একটু সতর্ক হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।”
সুতরাং বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। তবে সচেতন থাকতে হবে।