কলকাতা: তৃণমূল কাউন্সিলর কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপুল সম্পত্তি-সংক্রান্ত মামলায় আদালতে হলফনামা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন তাঁর আইনজীবী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইয়ের বউ কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আইনজীবী সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় সোমবার কলকাতা হাইকোর্টকে জানান, কাজরীর সম্পত্তির হিসাব নিয়ে যে মামলা দায়ের হয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে হলফনামা দিয়ে বক্তব্য জানাতে চান। আদালত এই আবেদন মঞ্জুর করেছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজরীর আইনজীবীকে বক্তব্য জানাতে হবে।
তৃণমূলের বর্তমান কাউন্সিলর কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপুল সম্পত্তির আয়ের উৎস জানতে চেয়ে মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা পুরভোটের সময়। কোনও সংস্থাকে দিয়ে তদন্তেরও আবেদন জানিয়েছিলেন মামলাকারী। কাজরীর আইনজীবী সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ভোটের আগে তাঁর মক্কেল এ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি রাজ্য নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছেন। একইসঙ্গে কাজরী এই আয়ের জন্য করও দিয়েছেন। তার যাবতীয় নথি রয়েছে। এরপরও তিনি হলফনামা দিয়ে বক্তব্য জানানোর ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।
প্রত্যেক ভোটপ্রার্থীকেই নির্বাচন কমিশনে হলফনামা জমা দিতে হয়। সেখানে নিজের সম্পত্তির হিসাবও পেশ করতে হয়। কলকাতা পুরভোটের আগে পুরনিগমের ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় যে হলফনামা কমিশনে জমা দেন, তাতে তাঁর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির আর্থিক পরিমাণ উল্লেখ করা ছিল ৩ কোটি ৮৬ লক্ষ ৮২ হাজার ৯৯৯ টাকা।
কাজরীর স্বামী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৯৮ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা। এ ছাড়া কালীঘাট সংলগ্ন এলাকা, ওড়িশা এবং বোলপুরে ৯ টি জমি তাঁর নামে রয়েছে বলে কমিশনে জানান কাজরী। একজন সমাজকর্মীর নামে কী ভাবে এত টাকা ও জমি থাকতে পারে, সেই প্রশ্ন তুলেই মামলা দায়ের হয়। আইনজীবী ইমতিয়াজ আহমেদ কাজরীর বিরুদ্ধে সেই মামলা করেন। কাজরীর সম্পত্তি কী ভাবে এত বাড়ল, তা কোনও সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করাতে হবে বলে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন তিনি।
এদিন আদালতে আইনজীবী সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, যদি কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের আর্থিক হিসাবে গোলমাল থাকে, তার আইন আলাদা। পাল্টা মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, রাজনীতির সঙ্গে বা কোনও ভোটপ্রার্থীর সম্পত্তি নিয়ে এই মামলায় কোনও বক্তব্য তিনি তুলে ধরছেন না। তবে একজন মুখ্যমন্ত্রীর ভ্রাতৃবধূ, যিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই থাকেন তখন দেখা উচিৎ এতটা কারও আয়ের পরিমাণ যখন সেই আয়ের উৎস কী!
উল্লেখ্য, এই ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের টিকিটে তিন বার জিতেছেন রতন মালাকার। কিন্তু এবার রতন মালাকারকে টিকিট না দিয়ে কাজরীকে টিকিট দিয়েছে তৃণমূল। এই নিয়ে দলের পুরনো কর্মী রতন মালাকার নির্দল প্রার্থী হিসাবেও ভোটে দাঁড়াতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছিল। যদিও পরে দলের কড়াকড়িতে মনোভাব বদলান রতন।