কলকাতা: “রাজ্য নির্বাচন কমিশন কনফিউজড। কী করবে ঠিক বুঝতে পারছে না।” রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তোপ দাগলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রাজ্য অফিসেই বসে সোমবার তিনি বললেন, “রাজ্য নির্বাচন কমিশন কমিশন। সরকারের পদলেহন করে নির্দেশ মেনে কাজ করবে না কী নিজের মতে কাজ করবে, ওরা বুঝতে পারছে না।”
কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আগেই থেকেই তুলছেন বিরোধীরা। কলকাতা পুরসভা নির্বাচনের সময় থেকেই তাঁরা এই অভিযোগ তুলে আসছিলেন। এবার বাকি চার পুরভোটের আগেও একই অভিযোগ বিজেপির রাজ্য সভাপতির মুখে।
বিধিনিষেধের মধ্যে পুরভোটের প্রচার কীভাবে হবে? তা নিয়ে সচেতন ছিলেন বিশ্লেষকরা। ২২ জানুয়ারি শিলিগুড়ি, বিধাননগর আসানসোল ও চন্দননগর পুরসভায় ভোট। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে ভোটের প্রচার চলবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। এরই মধ্যে সোমবার ভোটের গাইডলাইন প্রকাশ করে কমিশন। কোভিডের এই বাড়বাড়ন্তের মধ্যেই কেন ভোট, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সচেতকরা।
পুরভোটের গাইডলাইন
♦ কোন রোড শো কিংবা পদযাত্রা নয়। গত পুরসভায় ৪টে পর্যন্ত রোড শো ছিল। এবার গাড়ি, বাইক র্যালি সব বাদ। এক্ষেত্রে আগে অনুমতি নেওয়া থাকলেও রোড শো বাতিল করতে হবে।
♦ প্রতি পুরসভায় নোডাল হেলথ অফিসার নিয়োগ করা হবে।
♦ প্রার্থী, কাউন্টিং এজেন্ট, পোলিং অফিসার- সকলেরই ডবল বা সিঙ্গল ভ্যাকসিন নেওয়া থাকতে হবে।
বাড়িতে প্রচারে প্রার্থী-সহ পাঁচের বেশি অনুমতি নেই।
♦ খোলা মাঠে মিটিং ৫০০-র বেশি জনসমাগম নয়। প্রবেশ ও প্রস্থানের আলাদা গেট।
♦ অডিটোরিয়াম হলে ২০০ জন সর্বাধিক। কিংবা আসন সংখ্যার অর্ধেক অনুমতি পাবেন।
♦ প্রচারের সময় কমানো হয়েছে। সকাল ৯ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রচার।
♦ সাইলেন্স জোন বাড়িয়ে হচ্ছে ৭২ ঘণ্টা।
দেখা গিয়েছে, কোথাও মাস্ক ছাড়াই প্রচারে বেরিয়েছেন প্রার্থী। পদযাত্রায় দূরত্ব বিধি উঠেছে শিকেয়। দেখা গিয়েছে , যে কোনও দলের কর্মীদের অধিকাংশেরই মুখে মাস্ক নেই। মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাঁরা গিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে বিধি ভঙ্গের অভিযোগ। শিলিগুড়ি, আসানসোল-সর্বত্রই একই ছবি।
এদিকে, বড়দিন থেকে বর্ষবরণ- কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় হুল্লোড়ের মাসুল আপাতত গুনছে রাজ্য । দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দু হাজার ছাপিয়েছে। উৎসবের রেশের মাঝেই আবার ভোট! ফলে চিন্তা বাড়াচ্ছে আরও। বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে আমজনতা, সকলেরই ক্ষোভ রাজনৈতিক নেতাদের ওপরেই। কেন তাঁরা এই পরিস্থিতিতে ভোট-ভোট করছেন? প্রশ্ন করছেন সকলেই। এই পরিস্থিতিতে ভোট করাটা কি আদৌ যুক্তিযুক্ত? সেই প্রশ্নও তুলছেন সচেতকদের অনেকে।