সৌরভ দত্ত: ক্যানসারের চিকিৎসায় রাজারহাটের চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইনসস্টিটিউট (সিএনসিআই) কলকাতা তথা পূর্বভারতের সেরা হাসপাতাল। সম্প্রতি সিএনসিআই-এর মুকুটে নতুন এক পালক যোগ করলেন হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসা বিজ্ঞানী অসীমা মুখোপাধ্যায়।
ওভারির ক্যানসারে আক্রান্ত মেদিনীপুরের বছর পঞ্চাশের গৃহবধূর চিকিৎসা করা হল অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে। হাইপেক সার্জারি করা হয়েছে তাঁর। কলকাতা তথা পূর্বভারতে কোনও সরকারি হাসপাতালে এর আগে কখনও এত উন্নত প্রযুক্তির ক্যানসার সার্জারি হয়নি।
মেদিনীপুরের ওই মহিলার প্রথম ওভারি ক্যানসার ধরা পড়ে ২০১৬ সালে। চিকিৎসার পরও দু’বার ফিরে আসে অসুখ। ইংল্যান্ডের নিউক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া ও ক্যানসার নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা শেষে দেশের মানুষদের সেবা করার উদ্দেশে সিএনসিআইতে যোগ দিয়েছেন অসীমা মুখোপাধ্যায়।
অসীমা মুখোপাধ্যায় জানান, হাইপেক অর্থাৎ হাইপারথার্মিক ইন্ট্রাপেরিটোনিয়াল কেমোথেরাপি সার্জারি মূলত দুই ধাপের এক বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি। পেটের ভিতরে স্টেজ থ্রি বা স্টেজ ফোর ক্যানসার চিকিৎসায় হাইপেক সার্জারি অত্যন্ত উপযোগী। অত্যন্ত দক্ষ ও প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ক্যানসার চিকিৎসক ও তাঁর টিম ছাড়া এই চিকিৎসা সম্ভব নয়। টানা ১০-১২ ঘন্টার এই অস্ত্রোপচারের দু’টি ধাপ।
প্রথমে ক্যানসার যুক্ত টিউমারটি অপসারণ করা হয়। এরপর উচ্চ তাপমাত্রার কেমোথেরাপি সরাসরি পেটের মধ্যে প্রয়োগ করা হয়, যাতে ওই অংশে থাকা বাকি ক্যানসার কোষগুলি ধ্বংস হয়ে যায়। এই ভাবে পেটের মধ্যে ক্যানসারের ফিরে আসা (রিল্যাপ্স) আটকে দেওয়া যায়। ওভারির ক্যানসার ছাড়াও এন্ডোমেট্রিয়াম ক্যানসার, কোলোরেক্টাল ক্যানসার, কোলন ক্যানসার-সহ পেটের অ্যাডভান্স স্টেজের ক্যানসারের রেকারেন্স আটকে দিয়ে রোগীকে ভাল রাখা যায়।
বেসরকারি কর্পোরেট হাসপাতালে এই চিকিৎসার খরচ প্রায় ৬ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটে হাইপেক সার্জারির খরচ বেসরকারি হাসপাতালের এক পঞ্চমাংশ, আয়ুষ্মান ভারত বা স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে নিখরচায় এই অত্যাধুনিক পদ্ধতির চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে সিএনসিআইতে।
আরও পড়ুন: Covid Spike: এবার কলকাতা পুলিশে করোনার হানা, ৮৬ জন কোভিড পজিটিভ