কলকাতা: কোভিড সংক্রমণের (COVID Situation) বাড়াবাড়িতে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Alapan Bandyopadhyay ) চিঠি দিল চিকিত্সকদের দুই সংগঠন। দুই সংগঠনের পক্ষে কয়েকটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। করোনা আক্রান্তদের চিকিত্সায় বেসরকারি হাসপাতালের সংখ্যা বাড়ানো, ২৪ ঘণ্টা কোভিড কন্ট্রোল রুম রুম খুলে রাখা, জেলা স্তরে দ্রুত ভর্তি করানোর প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠন। এ ছাড়া, অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়ার তালিকা প্রকাশ ও মাস্ক না পরলে জরিমানার কথাও বলা হয়েছে চিঠিতে।
উল্লেখ্য, হাসপাতালগুলিতে বেডের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলিতে বেড বাড়ানো হলেও, তা পর্যাপ্ত নয়। গত বছর ঠিক এই সময় বেসরকারি হাসপাতাল, হোমগুলিকে অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। এবার কেন তা করা হচ্ছে না, কেন সেফ হোম চালু করা হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কলকাতার ক্ষেত্রে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও এম আর বাঙুর হাসপাতালে বেডের সংখ্যা পর্যাপ্ত হলেও, বাকি হাসপাতালগুলিতে বেডের সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়।
আরজিকর হাসপাতালে বেডের সংখ্যা মোটে ৬০, এনআরএসে ১৫০। তাও সিসিইউ আইসিইউতর ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়। গত বার দৈনিক সংক্রমণ চার হাজারের গণ্ডি পেরোয়নি। এবার তা ৬ হাজার পেরিয়েছে। গত বার এসএসকেএম হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতাল করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে সেটা করা হবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
রাজ্যে সব রেকর্ড ভাঙল করোনা। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনা আক্রান্ত ৫ হাজার ৮৯২ জন। বেড়েছে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ২৪ জনের। তবে পয়লা বৈশাখে বিভিন্ন মন্দিরগুলির চিত্র ভয় ধরিয়েছে। তার ওপর তো ভোট বঙ্গের নির্বাচনী প্রচার রয়েছে।
ইতিমধ্যেই কোভিডে মৃত্যু হয়েছে সামশেরগঞ্জের সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী রেজাউল হকের। প্রচারে বেরিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে কো-মর্বিডিটি হিসেবে ছিল ব্লাড সুগার। বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। আরও বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে কমিশন। খবর এসেছে, কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন গোয়ালপোখরের তৃণমূল প্রার্থী গোলাম রব্বানি। জলপাইগুড়ির তৃণমূল প্রার্থীও অসুস্থ। এই অবস্থায় নজির গড়লেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। নির্বাচনী সভা বাতিল করলেন তিনি। এই প্রথম কোনও প্রার্থী নির্বাচনী সভা বাতিল করেছেন।
করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই ভোটের দফা কমানোর সম্ভাবনা। শেষ তিন দফার ভোট হতে পারে ২৪ এপ্রিল। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বিশেষ বৈঠকে বসবে নির্বাচন কমিশন। তিন দফার ভোট এক সঙ্গে হলে, কোথায় কত বাহিনী মোতায়েন হবে, তা নিয়েও বৈঠক হবে। ইতিমধ্যেই বিএসএফের তরফে একটি বৈঠক হতে চলেছে।
আরও পড়ুন: মৃতের সংখ্যা পেরল হাজার! অবশেষে ভোটের দফা নিয়ে বড় সিদ্ধান্তের পথে নির্বাচন কমিশন
এই পরিস্থিতিতে ভোটপ্রচার নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠকেরও ডাক দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের। করোনা নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের পরেই বৈঠক ডাকে কমিশন। সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকের ডাক। ১৬ এপ্রিল শুক্রবার দুপুরে হবে বৈঠক।