কলকাতা : ফের একবার নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। প্যানেল প্রকাশ না করেই সহকারি অধ্যাপক পদে চাকরি দেওয়া হয়েছে এক প্রার্থীকে। এই অভিযোগে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন এক ব্যক্তি। এই অভিযোগের ভিত্তিতে আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য।
জানা গিয়েছে, চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলা বিষয়ের সহকারি অধ্যাপক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। একটি পদ সংরক্ষিত ছিল বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য। সেই মতো আবেদন করেছিলেন সঞ্জীব রজক নামে এক ব্যক্তি। তিনি ১০০ শতাংশ দৃষ্টিহীন।
২০১৭ সালের ৩ মে থেকে চম্পাহাটির সুশীল কর কলেজে বাংলা ভাষার সহকারি অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত সঞ্জীব রজক। ২২ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রারের তরফে চাকরিপ্রার্থীদের জানানো হয় যে অনলাইনে ইন্টারভিউ সম্পূর্ন করতে হবে। নিয়োগের পরীক্ষা বা টিচিং এবিলিটি অ্যাসেসমেন্টও অনলাইনে নেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল।
মামলাকারীর দাবি, তিনি নির্বাচক কমিটির সামনে সব তথ্য পেশ করেন। পরে তিনি জানতে পারেন যে ওই পদে অন্য একজন ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হয়েছে।
মামলাকারীর দাবি, যে ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হয়েছে তাঁর যোগ্যতা কম এবং বিশেষ সক্ষমতার যে শংসাপত্র তিনি দিয়েছেন সেটাও আসল নয়। উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারকে এই অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। তারপর মামলা দায়ের হয় আদালতে। সেই মামলাতেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিন সপ্তাহ পরে ফের রয়েছে মামলার শুনানি।
কয়েকদিনে আগেও আরও এক অভিযোগ উঠেছিল যাদবপুরে। সুকন্যা ঘোষ দস্তিদার নামের এক মহিলা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে জুনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাসিসটেন্ট পদে যোগ দেওয়ার জন্য গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেটার হেডে লেখা নিয়োগ বৃত্তান্ত। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়, এই ধরনের কোনও নিয়োগই হয়নি। শুধু তাই নয়, যে নিয়োগকর্তার নাম রয়েছে সেই নামের কোনও আধিকারিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। এমনকী এই নামের কোনও পদও নেই বিশ্ববিদ্যালয়ে। সম্পূর্ণ ভুয়ো একটি নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য তথা তুলনামূলক সাহিত্যের অধ্যাপক স্যমন্তক দাস। ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন বলে জানান ওই চাকরিপ্রার্থী।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আরও এক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসে। ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যাপক নিয়োগের সময় নিয়ম বহির্ভূত কাজ করা হয়েছে বলে তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান ওমপ্রকাশ মিশ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। যোগ্য প্রার্থীদের ইন্টারভিউতে না ডেকে এপিআই সূচকে পিছিয়ে থাকা প্রার্থী ডাক পান বলে অভিযোগ অধ্যাপকদের।
এমনকি পিএইচডি ডিগ্রি না থাকা ব্যক্তিও এই পদে ইন্টারভিউয়ে ডাক পান। মূলত স্বজনপোষণ ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলে জুটা। আরও অভিযোগ, নিয়োগের সময় যে বিশেষজ্ঞ প্যানেল তৈরি হয়েছিল, তাতে মহিলা এক্সপার্ট ছিলেন না, যা ইউজিসির নিয়মের বিরোধী।
আরও পড়ুন : Madan Mitra: ‘বেশি ফেসবুক কোরো না’, নির্দেশ পেয়েই সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়লেন মদন মিত্র