কলকাতা: করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। গত সাতদিন যে সমস্ত জেলায় করোনা সংক্রমণ বেড়েছে, সেখানে আরও কড়াকড়ির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার এই বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নবান্ন সূত্রে খবর, যে সমস্ত এলাকায় গত সাত দিনে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে সেখানে কড়াকড়ি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাস্ক অত্যাবশ্যক করতে হবে। একজনকেও এ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।
একইসঙ্গে বৈঠকে টেলিমেডিসিনের উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রের দাবি। ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ় গ্রহণের ক্ষেত্রে এখনও বেশ কয়েকটি জেলা ৫০ শতাংশের নিচে বলে জানা গিয়েছে। দ্রুত এই সমস্ত জেলায় যেন ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়া সম্পূর্ণ হয়ে যায় সেদিকে নজর দিতে বলা হয়েছে। এদিন জেলাশাসক ও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। সেখানেই এই সমস্ত দিকে নজর বাড়ানোর কথা বলা হয়। সূত্রের খবর, যে অঞ্চলগুলিতে করোনা সংক্রমণ বর্ধমান এই বৈঠকে সেগুলি নিয়ে আলোচনা করা হয়। গত সাতদিনের করোনাগ্রাফ বিচার করে নজরদারি বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সোমবার রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ২৮৬ জন। এর মধ্যে কলকাতায় সংক্রমিতের সংখ্যা ৫৫৫৬ জন। বাকি পুরোটাই জেলার চিত্র। জেলায় সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। গত ২৪ ঘণ্টায় এই জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪২৯৭ জন। শনিবার ৫০৫৩ জন সংক্রমিত হয়েছিলেন। সোমবার এখানে ২ জন করোনার বলি হন।
হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংক্রমণের চিত্রও খুব একটা স্বস্তির নয়। ১ হাজার ৬২৫ জন করোনা আক্রান্ত হাওড়ায়। হুগলিতে দৈনিক সংক্রমণ ৯৩৪, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১২৫৫। উল্লেখযোগ্যভাবে সংক্রমণ বেড়েছে দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, দক্ষিণ দিনাজপুরে। গত ২৪ ঘণ্টায় দার্জিলিংয়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮২ জন। দক্ষিণ দিনাজপুরে ১২৩ জন এবং আলিপুরদুয়ারে ৫৩ জন। এই তিন জেলায় শনিবার যথাক্রমে করোনা আক্রান্ত হন ৩১৯ জন, ১০৫ জন ও ৩৩ জন।
যদিও ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞ ক্লাইভ ডিক্স ইতিমধ্যেই স্বস্তির কথা শুনিয়েছেন এই কোভিড নিয়ে। ইউনাইটেড কিংডমের ভ্যাকসিন টাস্ক ফোর্সের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ক্লাইভ বলছেন, ওমিক্রন এনডেমিকের শুরু। করোনা এবার ক্রমশ ক্ষমতা হারাবে। সাধারণ ফ্লুয়ের মতো থেকে যাবে কোভিড। তাই নতুন ভাবনাচিন্তার প্রয়োজন। ক্লাইভ জানান, ফ্লুয়ের মতো যেহেতু করোনা থেকে যাবে তাই মোকাবিলায় নতুন পন্থা চাই। তাই শুধু ভাইরাস প্রতিরোধ নয়, এখন রোগ নিরাময় নিয়েও ভাবনাচিন্তা দরকার। ভ্যাকসিনের থেকেও এখনও ওষুধের প্রয়োজন বাড়ছে।
আরও পড়ুন: Covid Bulletine: গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা কম, দৈনিক সংক্রমণের গ্রাফও নিম্নমুখী বাংলায়