সুর নরম অনিল-কন্যার, ‘জাগো বাংলা’য় লেখা নিয়ে দলের কাছে ‘দুঃখপ্রকাশ’ অজন্তার

Ajanta Biswas: অজন্তা বিশ্বাসকে শোকজ করেছিল এরিয়া কমিটি। কলকাতা জেলা কমিটির অধীনে থাকা অধ্যাপক গবেষকদের এরিয়া কমিটির সদস্য তিনি।

সুর নরম অনিল-কন্যার, 'জাগো বাংলা'য় লেখা নিয়ে দলের কাছে 'দুঃখপ্রকাশ' অজন্তার
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 06, 2021 | 1:21 PM

কলকাতা: শেষমেশ সুর নরম করলেন অজন্তা বিশ্বাস। সূত্রের খবর, তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় লেখা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন সিপিএমের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক প্রয়াত অনিল বিশ্বাসের কন্যা। টানা কয়েকদিন নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন অজন্তা। বুঝিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে ‘জাগো বাংলা’য় তিনি যা লিখেছেন, তাতে কোথাও কোনও ভুল ছিল না। সূত্রের খবর, হঠাৎই শুক্রবার নিজের অবস্থান বদল করেন তিনি। এই লেখায় কেউ দুঃখ পেলে, তিনিও দুঃখিত বলেই দলকে জানান অজন্তা।

ঘটনার সূত্রপাত গত ২৮ জুলাই। তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’র সম্পাদকীয় পাতায় ‘বঙ্গরাজনীতিতে নারীশক্তি’ শীর্ষক একটি লেখা প্রকাশিত হয়। লেখিকা অধ্যাপক অজন্তা বিশ্বাস। স্বভাবই এই লেখা ঘিরে হইচই পড়ে যায়। কট্টর বাম সমর্থক এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া বিরোধিতায় বার বার যে অনিল বিশ্বাসের নাম শিরোনামে উঠে এসেছে, সেই অনিল বিশ্বাসের কন্যাই কী ভাবে জাগো বাংলায় লিখলেন তা নিয়ে নৈতিকতার প্রশ্ন ওঠে বাম-মহলে।

এরপরই দলের তরফে অজন্তা বিশ্বাসকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়। একজন সিপিআইএম সদস্য হয়ে তিনি কী ভাবে তৃণমূলের মুখপত্রে লিখলেন তা নিয়ে জবাব চায় দল। কিন্তু প্রথম থেকেই অজন্তা বলে এসেছেন, “আমি ইতিহাসের শিক্ষার্থী। আমার গবেষণার অন্যতম বিষয় বঙ্গ নারী। বেশ কিছুদিন ধরেই এ নিয়ে আমি গবেষণা করছি। এমনই একটি লেখা প্রাক স্বাধীনতা পর্বে অবিভক্ত বাংলায় এবং পশ্চিমবাংলার রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ। এই লেখায় কংগ্রেসী নেত্রীদের কথা যেমন এসেছে, তেমনই এসেছে বামপন্থী নেত্রীদের অবদানের প্রসঙ্গও। বঙ্গের রাজনীতিতে নারীদের ভূমিকা নিয়ে লিখতে গেলে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ও প্রসঙ্গ আসাটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। তিনি বাংলার প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। মহিলা নেত্রী হিসাবে দীর্ঘদিন তিনি পুরুষ-প্রধান রাজনীতির অসম লড়াইয়ে নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন।”

গত বুধবার পর্যন্তও এই অবস্থানেই ছিলেন অজন্তা। কিন্তু শুক্রবার হঠাৎই বদলে গেল অজন্তার সুর। জাগো বাংলায় লেখার জন্য অনুতাপের সুর ধরা পড়ল অনিল-কন্যার গলায় বলে খবর দলীয় সূত্রের। সূত্রের খবর, অজন্তা দলকে জানিয়েছেন, তিনি এই ঘটনার জন্য দুঃখিত। তাঁর এই লেখায় কেউ যদি দুঃখ পেয়ে থাকে তা হলে তার জন্য তিনি ক্ষমা চাইছেন। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে তিনি সতর্ক থাকবেন।

প্রসঙ্গত, অজন্তা বিশ্বাসকে শোকজ করেছিল এরিয়া কমিটি। কলকাতা জেলা কমিটির অধীনে থাকা অধ্যাপক গবেষকদের এরিয়া কমিটির সদস্য তিনি। অজন্তার জবাব নিয়ে আলোচনা হবে ব্রাঞ্চ ও এরিয়া কমিটিতে। আলোচনা হবে কলকাতা জেলা কমিটিতেও। তবে তাঁকে নিয়ে সিপিএম কী ভাবছে তা এখনও স্পষ্ট করেনি। যদিও প্রথম থেকেই সিপিএম বলেছিল, অজন্তা ক্ষমা চেয়ে নিলে দল হয়ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে না।

যেমন একদা কলকাতা জেলা কমিটির নেতা কৌস্তুভ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দল শাস্তিমূলক পদক্ষেপের পক্ষেই হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই সময়ে কৌস্তুভ তাঁর ভুলের স্বীকার করে নেন। তারপরে আর দলের প্রাক্তন ছাত্র নেতার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করেনি দল। আরও পড়ুন: ব্রাত্য বসুর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ! হাতে লাল গোলাপ নিয়ে হাজির পুরসভার শিক্ষিকারা