আলিমুদ্দিনের স্বীকারোক্তি: ২০০৮ থেকেই দলের জনসমর্থন কমছিল! আর নয় ‘বিজেমূল’ তত্ত্বের প্রচার, বার্তা কর্মীদের

TV9 Bangla Digital | Edited By: ঈপ্সা চ্যাটার্জী

Aug 05, 2021 | 11:23 AM

CPIM: নোটে বলা হয়েছে, "স্বীকার করে নিতে হবে, ২০০৮ থেকে জনসমর্থনের যে ক্ষয় শুরু হয়েছিল, তা রোধ করা যায়নি। ২০০৮ সাল থেকে ক্ষয়ের বিশ্লেষণ করতে হবে।''

আলিমুদ্দিনের স্বীকারোক্তি: ২০০৮ থেকেই দলের জনসমর্থন কমছিল! আর নয় বিজেমূল তত্ত্বের প্রচার, বার্তা কর্মীদের
প্রতীকী চিত্র

Follow Us

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ: আগেই ব্যক্তিগত ভাবে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র জানিয়েছিলেন যে বিজেমূল তত্ত্বের প্রচার ভুল ছিল তাঁদের। এবার দলগত ভাবেও জানানো হল তৃণমূল ও বিজেপিকে একাসনে বসিয়ে আক্রমণ ঠিক হয়নি। একইসঙ্গে সূর্যবাবুদের পর্যালোচনা, ‘১১ নয়, ২০০৮ সাল থেকেই সিপিএমের সিপিএমের জনসমর্থন কমছিল!

৫ আগস্ট দলের পাঠচক্র সম্পর্কিত নোটের বিষয়বস্তু ছিল ‘নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতি ও আমাদের কাজ।’ সেই নোট এদিন জেলা কমিটি এবং রাজ্যের সমস্ত ইউনিটকে দেওয়া হয়। পার্টি সদস্যদের নিয়ে শাখা ও এলাকা ভিত্তিক এই পাঠচক্র অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়েছে।

আলিমুদ্দিনের বার্তা, নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতিতে হতাশ হলে চলবে না। বিপর্যয়ের মধ্যেও সম্ভাবনা আছে। পাশাপাশি বিজেপি এবং তৃণমূল যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা রক্ষা করেনি। তা নিয়ে ক্ষোভ বাড়বে মানুষের। মানুষের মৌলিক সমস্যার সমাধান করতে অসমর্থ কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দল। তাই ব্যাপক আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়ে মোকাবিলা করতে হবে এই চ্যালেঞ্জ। দাঁড়াতে হবে মানুষের পাশে।

এদিকে উল্লেখযোগ্য ভাবে সিপিএম স্বীকার করল যে ২০০৮ সাল থেকে পার্টির জনসমর্থন কমেছে। নোটে বলা হয়েছে, “স্বীকার করে নিতে হবে, ২০০৮ থেকে জনসমর্থনের যে ক্ষয় শুরু হয়েছিল, তা রোধ করা যায়নি। ২০০৮ সাল থেকে ক্ষয়ের বিশ্লেষণ করতে হবে।”

পাশাপাশি আলিমুদ্দিন এও জানাচ্ছে, বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের বিষয়ে পার্টির অবস্থান এবং স্লোগান নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। পার্টির কর্মসূচিগত বোঝাপড়া হ’ল, বিজেপি আর অন্য কোনও রাজনৈতিক দল এক নয়। এটাই পার্টির বোঝাপড়া। কিন্তু, নির্বাচনের সময় কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজেপি আর তৃণমূল সমান। ‘বিজেমূল’ স্লোগান এবং বক্তৃতা ব্যবহার করায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছে সিপিএম।

একুশের নির্বাচন নিয়ে কাটাছেঁড়া করতে গিয়ে সিপিএমল এও জানাচ্ছে যে, “‘সংযুক্ত মোর্চা’ শব্দ এলেও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন কেন আমরা ফ্রন্ট বলছি না। আমাদের কাছে ফ্রন্ট মানে ‘বামফ্রন্ট’। সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নামে যদি ৫০০টির বেশি সংগঠন এক হতে পারে, তাহলে বিজেপি-তৃণমূল বিরোধী সব শক্তিকে কেন আমরা সংযুক্ত মোর্চার নামে এক করতে পারব না? বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং আইএসএফের ইশতাহার এক হলেও যৌথ আবেদন করা হয়েছিল। আমাদের পার্টি কিছু নির্দিষ্ট আসনকে অগ্রাধিকার দিয়েছিল শক্তিশালী লড়াই করার জন্য।”

এখন পার্টির ভবিষ্যতের অগ্রাধিকার হল, নিজস্ব শক্তি বৃদ্ধি করা। একইসঙ্গে বামফ্রন্টকে শক্তিশালী করা। বামফ্রন্টের বাইরে থাকা অন্য দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে এগোনোর চেষ্টা করা হবে আগামিদিনে, বার্তা সিপিএমের। রাজ্যে বিজেপি-তৃণমূলের বিরুদ্ধে কংগ্রেস-সহ সব শক্তিকে সমবেত করতে লড়াই চালাবে তারা।

তবে সংযুক্ত মোর্চা থাকবে কিনা, তা নির্ভর করছে সব শরিকদের ওপর বলে জানাচ্ছে আলিমুদ্দিন। তবে সিপিএম নিজে থেকে সংযুক্ত মোর্চা তুলে দেওয়ার পক্ষে নয়। বরং এরাজ্যে হওয়া ৭টি উপনির্বাচনে যে দল যেখানে প্রার্থী দিয়েছিল, আবার সেখানেই লড়াই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, পুরসভা এবং শিলিগুলি মহকুমা নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিধানসভা ভোটে যে বোঝাপড়া হয়েছিল, সেগুলোও সিপিএম ভাঙতে চায় না। আলিমুদ্দিনের সিদ্ধান্ত, নির্বাচনে বোঝাপড়া হবে সংযুক্ত মোর্চার মধ্যে দিয়েই। তার আগে দরকার যুক্ত সংগ্রাম।

পাশাপাশি যাঁরা নির্বাচনে নিষ্ক্রিয় ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে সক্রিয় করতে হবে বলে জানানো হয়েছে নোটে। অন্যদিকে পার্টি বিরোধী কাজে যাঁরা যুক্ত ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না সিপিএম। পার্টির তরুণ প্রজন্মকে আরও কাজ করার সুযোগ দিতে হবে বলে সিদ্ধান্ত আলিমুদ্দিনের।

পরিশেষে বলা হয়েছে, রেড ভলান্টিয়ারদের কাজে কোনওরকম খবরদারি নয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় পার্টি সদস্যদের ব্যক্তি প্রচার, ফ্যানক্লাব খোলা এসব পার্টি বিরোধী কাজ বলে মনে করছে সিপিএম। এই ধরনের ‘আত্মপ্রচারমুখী কাজ’ থেকে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। আরও পড়ুন: বানভাসি বঙ্গে মৃত ২৩, জলের তলায় কয়েক লক্ষ হেক্টর কৃষিজমি, প্রভূত ক্ষতির আশঙ্কায় রাজ্য 

Next Article