কলকাতা: লোক চাই। বলছে সিপিএম। তবে পার্টি কর্মী নয়, একেবারে ‘চাকরি’। সোশ্য়াল মিডিয়ায় পোস্ট করে ‘Hiring’ এর বিজ্ঞাপন দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। রাজনৈতিক বিশ্লেষক থেকে কন্টেন্ট রাইটার, গ্রাফিক্স ডিজাইনার থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ, চার থেকে আট বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোকজন খুঁজছেন সেলিমরা। নেওয়া হবে পলিটিক্যাল ইন্টার্নও। সে ক্ষেত্রেও ১ থেকে ৩ বছরের অভিজ্ঞতা দরকার। দেওয়া হয়েছে কিউআর কোড। তা স্ক্যান করেই করা যাবে আবেদন। দেওয়া হয়েছে ই-মেল আইডিও। এই পোস্ট সামনেই আসতেই তুমুল চর্চা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বঙ্গ রাজনীতির আঙিনায়। তবে কী এবার বিজেপি-তৃণমূলের দেখানো রাস্তায় হাঁটছে ‘সংগঠিত’ বামেরা? ‘শূন্যের হাল’ ফেরাতে খুঁজছে প্রশান্ত কিশোরের মতো কোনও ‘স্ট্র্য়াটেজিস্ট’? পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে চড়াতে আরও ‘কর্পোরেট কালচারে’ শান দিতে চাইছে বাংলার লাল ব্রিগেড? প্রশ্ন ঘুরছে।
কী বলছেন সেলিম?
মহম্মদ সেলিম যদিও মনে করছেন এতে সিপিএমের নিজস্ব সক্ষমতা বাড়বে। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “সমাজ মাধ্যম মানে সমাজের সঙ্গে কানেক্ট করা। মাধ্যম হল প্রযুক্তি। প্রযুক্তি যারা জানে, তাদের কাছে শেখার আছে। এর মধ্যে সৃজনশীলতা আছে। আমাদের তরুণ, সাংস্কৃতিক ফ্রন্টের লোকেদের ট্রেনিং দরকার। পাশাপাশি কাজ করলে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধি হবে। সিপিএমের নিজস্ব সক্ষমতা বাড়বে। পার্টির বাইরে অনেকে থাকে, যারা দরদী, সমর্থক। সকলকে নিয়ে মানবসম্পদ তৈরি হয়।”
এদিকে সেলিমের পোস্টের পর থেকে ‘চাকরি’ ও ‘বেতন’ নিয়েও শুরু হয়েছে বিস্তর চর্চা। সূত্রের খবর, এই কাজ করতে গেলে ভলান্টিয়ারি কাজ করার মানসিকতাও থাকতে হবে। পার্টির সমর্থক, দরদী, শুভানুধ্যায়ী তাঁরা অনেকে সরাসরি দলের কাজ করতে পারেন না। কিন্তু এইভাবে কাজ করতে পারেন। তবে কতজন নেওয়া হবে সেটা এখনও স্থির হয়নি। পরিস্থিতি অনুসারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে বেতন খুব বেশি না হলেও দেওয়া হবে।
ইতিমধ্যেই বিষয়টি সিপিআইএমের রাজ্য কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। সেখান থেকে ছাড়পত্র এসে গিয়েছে। তারপরই পোস্ট সেলিমের। তবে দলের অন্দরে আবার কেউ কেউ গোটা প্রক্রিয়া নিয়ে খানিকটা হলেও সংশয় প্রকাশ করছেন বলে খবর। এতে আখেড়ে খুব বেশি লাভ হবে কিনা সেই প্রশ্নও তোলা হচ্ছে। এর আগেও এভাবে লোক নিয়োগ না হলেও অনেক একাধিক গতিবিধি কিন্তু দেখা গিয়েছে। যেমন ৩৬০ প্রচার, পাহারায় পাবলিক। সেগুলি কতটা লাভ দিল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। আবার কিছুদিন আগে AI সঞ্চালিকার ব্যবহার হয়েছিল, সামনে এসেছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের AI প্রতিরূপও। যদিও তারপর আর এই বিষয়ে খুব একটা কিছু দেখা যায়নি। সেগুলি হয়তো আবার গতি পাবে বলে মনে করছেন সিপিআইএমের কোনও কোনও নেতা।