CPIM : ‘তেতো গেলার মতো গিলতে হবে’, যশবন্তকে সমর্থন নিয়ে প্রশ্নের মধ্যে বললেন বিকাশ

Presidential Election 2022 : রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এ রাজ্য থেকে বামেদের প্রতিনিধি হিসেবে একমাত্র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ভোট দেবেন। যশবন্ত সিনহাকে সমর্থন নিয়ে তিনি বলেন, "প্রার্থী নিয়ে যতই দ্বিমত থাকুক, বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে ভোট দিতে হবে।"

CPIM : 'তেতো গেলার মতো গিলতে হবে', যশবন্তকে সমর্থন নিয়ে প্রশ্নের মধ্যে বললেন বিকাশ
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে যশবন্ত সিনহাকে ভোট দেবেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 22, 2022 | 7:19 PM

কলকাতা : রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের প্রার্থী হয়েছেন যশবন্ত সিনহা (Yashwant Sinha)। তাঁকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিআইএম-সহ বাম দলগুলি। আর এই নিয়েই সিপিএমের নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাঁদের প্রশ্ন, ‘বিজেমূল’ যশবন্ত সিনহাকে কেন সমর্থন করা হবে? আর এই ক্ষোভের মধ্যেই যশবন্ত সিনহাকে সমর্থনের কারণ ব্যাখ্যা করলেন এ রাজ্য থেকে সিপিএমের একমাত্র রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর যুক্তি, “বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে ভোট দিতে হবে।”

বছর চুরাশির যশবন্ত সিনহার রাজনীতিতে প্রবেশ জনতা পার্টির হাত ধরে। তারপর প্রায় ২৬ বছর বিজেপি করেছেন। ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিজেপিতে ছিলেন। গতবছর তিনি যোগ দেন তৃণমূল। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম গতকাল ঘোষণা করা হয়। তার আগেই গতকাল সকালে তৃণমূল ছাড়ার কথা জানান তিনি।

সিপিএমের নিচুতলার কর্মীদের প্রশ্ন, বালিগঞ্জে বিধানসভার উপনির্বাচনে বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন দলের নেতারা। বাবুল বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাঁকে বিজেমূল বলে আক্রমণ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, যশবন্ত সিনহাও বিজেমূল। বাবুলও যা, যশবন্তও তাই। তাহলে তাঁকে কেন সমর্থন করা হবে? তরুণ প্রজন্মের অনেকে দলের সদস্যপদ ছাড়ার হুমকিও দিচ্ছেন।

দলের অনেক নেতা প্রকাশ্যে না বললেও ঘনিষ্ঠ মহলে যশবন্তকে সমর্থন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ কেউ আবার ২০০২ সালের উদাহরণ টেনে আনছেন। ওই বছর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে স্বাধীনতা সংগ্রামী ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী সেহগলকে প্রার্থী করেছিল সিপিএম। সেবার এ পি জে আবদুল কালামকে সমর্থন করেছিল কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি ও এনডিএ জোটের দলগুলি। তেলুগু দেশম পার্টি, এআইএডিএমকে, বিএসপি-ও সমর্থন করে কালামকে। আর কালাম মনোনয়ম জমা দেওয়ার দু’দিন পর কংগ্রেসও জানিয়ে দেয়, তারা কালামকে সমর্থন করবে। কালামের বিরোধিতা করে প্রার্থী দেয় সিপিএম। এখন যশবন্ত সিনহাকে বামেরা সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সিপিএমের একাংশ প্রশ্ন তুলছে, এবারও কি অন্য কাউকে প্রার্থী করা যেতে পারত না ?

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে একটাও আসনে জেতেনি সিপিএম। তার আগে ২০১৯ সালে লোকসভা আসনেও তাদের খাতা ছিল শূন্য। এ রাজ্যে বামেদের একমাত্র রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এ রাজ্য থেকে বামেদের প্রতিনিধি হিসেবে একমাত্র তিনিই ভোট দেবেন। যশবন্ত সিনহাকে সমর্থন নিয়ে তিনি বলেন, “প্রার্থী নিয়ে যতই দ্বিমত থাকুক, বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে ভোট দিতে হবে। দেশবাসী একটা ঐক্য হয়েছে, কৌশলগত দিক থেকে তার সঙ্গে থাকা উচিত।”

তবে, ‘বিজেমূল’ যশবন্তকে প্রার্থী করা নিয়ে তিনি যে খুব একটা খুশি নন, তাও বুঝিয়ে দিলেন এরাজ্যের একমাত্র বাম সাংসদ। তিনি বলেন, “যশবন্ত সিনহা যে প্রার্থী হিসেবে খুব ভাল, তা নয়। তাঁর থেকে যোগ্যতর প্রার্থী বাছাই করতে পারলে ভাল হত । কিন্তু, যখন সর্বসম্মত ভাবে বাছাই করা যায়নি, তখন কী আর করা যাবে। তেতো গেলার মতো গিলতে হবে আপাতত।”

এত প্রশ্নের মধ্যে যশবন্ত সিনহাকে সমর্থনের সিদ্ধান্তে অনড় সিপিএম। তাই ‘তেতো গেলার’ মতো হলেও তাঁকে ভোট দেবেন বিকাশবাবু। এদিকে, সিপিএমের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে যশবন্ত সিনহার বক্তব্য পোস্ট করা হয়। কিন্তু, সেখানে কমেন্ট সেকশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অনেকে বলছেন, যশবন্তকে নিয়ে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ যাতে কমেন্ট সেকশনে না উপচে পড়ে, সেকারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম।