কলকাতা: সিপিএমের (CPIM) পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহিকে শুক্রবার দলীয় কার্যালয় থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। আবাস যোজনা নিয়ে সিপিএমের স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এরপরই সেদিন রাতে নিরঞ্জন সিহি সহ আরও অনেক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে অবশ্য ব্যক্তিগত জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সিহি। ওই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার জেলায় জেলায় প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেয় সিপিএম। রাস্তায় নেমে চলে বিক্ষোভ। নন্দকুমারের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সিপিএম রাজ্য নেতৃত্বও। এদিন মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তীরা গতরাতের ঘটনার কড়া ভাষায় সমালোচনা জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে সিপিএম।
মহম্মদ সেলিম বলেন, “কোন এক্তিয়ারে পার্টি অফিসের মধ্যে পুলিশ ঢুকেছিল? কোন আদালত নির্দেশ দিয়েছিল? আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা আইনের পথে যাব। আমাদের আইনজীবীরা আদালতের দ্বারস্থ হবেন। দোষী পুলিশদের শাস্তি দিতে হবে।” সঙ্গে গতরাতের ঘটনার বিভিন্ন ভিডিয়োও এদিন তুলে ধরা হয় সিপিএমের তরফে। আগামী দিনে নন্দকুমারে যাওয়ার কথাও জানিয়ে দিল সিপিএম রাজ্য নেতৃত্ব। ৩ জানুয়ারি সুজন চক্রবর্তী, অনাদি সাহু ও বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে নন্দকুমারে কয়েক হাজার মানুষের মিছিল হবে বলে জানানো হয় সাংবাদিক বৈঠকে।
জামিন পাওয়ার পর চিকিৎসার জন্য কলকাতায় এসেছেন নিরঞ্জন সিহি। তিনি এদিন সরাসরি তিন পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। বললেন, “কাল পুলিশ যে ঘটনা ঘটিয়েছে, তা আমার ৪৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে কখনও দেখিনি। আমি তিনজন পুলিশকে জানি…. কৃষ্ণেন্দু মণ্ডল, মনোজ মণ্ডল এবং ওসি মনোজ ঝাঁ আমাকে পার্টি অফিস থেকে ঘাড় ধরে, কলার ধরে বর্বরোচিতভাবে নিয়ে গিয়েছে। হিংস্র জন্তু-জানোয়াররাও এভাবে করে না। ৩ তারিখ আমরা বিডিও অফিসেও যাব, থানাতেও যাব। কত গ্রেফতার করতে পারে, কত মারতে পারে, তা আমরা এবার বুঝে নিতে চাই। পুলিশ প্রস্তুত থাকুক। মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। পুলিশ কি আমাকে চেনে না? আমি জেলা বিভাজনের পর দুইবারের সভাধিপতি। ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দলের জেলা সম্পাদক। পুলিশ প্রশাসন সবাই চেনে ও জানে। জেলা সম্পাদককে পার্টি অফিস থেকে যেভাবে তুলে নিয়ে এসেছে, যেভাবে মেরেছে, তা চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না।”