কলকাতা: বাগুইআটিতে দুই ছাত্র অপহরণ করে খুনের ঘটনা নিয়ে বর্তমানে জোরদার চর্চা চলছে বাংলার রাজ্য-রাজনীতিতে। ইতিমধ্যেই নিহত পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করতে মঙ্গলবার বাগুইআটি গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তবে অভিষেকের নষ্করের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার আগেই পড়েন স্থানীয়দের বাধার মুখে। এবার বাগুইআটি গেলেন বাম নেতারা। দেখা করলেন অভিষেক নষ্করের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। তবে তাঁদের ঘিরে ধরেও বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয়রা। তাঁদের সাফ দাবি, এ ঘটনায় তাঁরা কোনও রাজনীতি চান না। এদিন বামদের যে প্রতিনিধি দল এদিন বাগুইআটি যান তার মধ্যে ছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। ছিলেন সপ্তর্ষি দেব, পলাশ দাশ, জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী, এসএফআই নেতা সৃজন ভট্টাচার্য সহ অনেকেই।
সূত্রের খবর, এদিন অভিষেকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যে সময় কথা বলছিলেন বাম নেতারা, সেই সময় বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেলিম-সুজনদের পাড়া ছেড়ে চলেও যেতে বলেন। তবে ততক্ষণে বাম নেতাদের সঙ্গে মিনেট কুড়ি কথা হয়ে গিয়েছে সৃজন-সুজনদের। তবে এ ঘটনার জেরে পাড়ায় চাপা উত্তেজনাও তৈরি হয়। সূত্রের খবর, অভিষেকের বাড়ির সামনে তাঁর ছবিতে মালা দিতে গিয়েও স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়েন সুজন-সেলিমরা। শেষে পর্যন্ত পাড়া ছাড়তে বাধ্য হন তাঁরা। এ ঘটনায় যে বামেদের অস্বস্তি বাড়বে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
সূত্রের খবর, সেলিমরা যখন মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের বারবার অতীতের বাম শাসনের কথাও মনে করান। আনন্দমার্গীর কথা তুলে বাম শাসনের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দেন। যদিও সিপিএমের দাবি যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁরা মূলত তৃণমূলের লোক। স্থানীয় কাউন্সিলরের মদতেই এই বিক্ষোভ দেখানো হয় বলেও দাবি করেছেন তাঁরা। এদিকে বাগুইআটি থানা থেকে অভিষেকের বাড়ি হেঁটে মিনিট দশেক। এদিন বাগুইআটি থানার পাশে একটি সভাও করে বাম নেতারা। বক্তৃতা দেন সেলিম-সুজনরা। অভিষেকের বাড়ি থেকেই হেঁটেই সভাস্থলে আসেন তাঁরা।
অন্যদিকে এদিনের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এসএফআই নেতা সৃজন ভট্টাচার্যকে বলতে শোনা যায়, “কিছু মিডিয়া বলছে, সেলিমদা বা সুজনদাকে ফিরিয়ে দিয়েছে অভিষেকের পরিবার। ঠিকই। তবে অভিষেক নস্করের পরিবার না। তাদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলেছেন সেলিমদা, সুজনদা, পলাশদা। ছিলাম আমরাও। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জল খেয়ে বেরিয়ে বাইরে সভা করেন আমাদের নেতারা। এখানে সংকীর্ণতার কোনো প্রশ্ন নেই, খুনিদের শাস্তি চাই।” অন্যদিকে তৃণমূলের দিকে কটাক্ষবাণ শুনে দিয়ে তিনি মহম্মদ সেলিম বলেন, “একদল যায়, অপরাধীরা শাস্তি পায়। আর এক দল যায়, অপরাধীরা শাস্তি যাতে না পায়। সেখানে আপনারই দেখছেন কারা কী চায়।”