কলকাতা: পুজোর আনন্দ, জৌলুস-সব এখন ফিকে ওঁদের কাছে। টানা রাস্তায় বসে বাংলার শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা। চাকরির দাবিতে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। পুজোর দিনগুলিতে ওঁদের চোখে-মুখে কোনও আনন্দ নেই, আছে শুধু হতাশা। আর না পাওয়ার চাপা যন্ত্রণা। পুজোর দিনগুলিও ধর্মতলার ‘ধরনা-তলায়’ খোলা আকাশের নীচে কাটছে ওঁদের। সপ্তমীর দুপুরে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সঙ্গে ছিল সিপিএমের ছাত্র-যুব নেতৃত্বও। গান্ধী মূর্তি ও মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশ মিলিয়ে মোট সাতটি ধরনা মঞ্চে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করলেন সেলিমরা। কোনও ধরনা-মঞ্চের বয়স প্রায় হাজার দিনে কাছাকাছি, কোনওটির আবার সাড়ে চারশো দিন, কোনওটির চারশো দিন।
বিধানসভায় বামেদের কোনও প্রতিনিধিই এখন নেই। একুশের নির্বাচনের আগে সংযুক্ত যৌথ মোর্চার একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে বিধানসভায় রয়েছেন আইএসএফের নওশাদ। বাংলার প্রধান বিরোধী দল হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি। এমন অবস্থায় পুজোর সময়ে আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে নতুন করে নিজেদের অস্তিত্ব বোঝানোর চেষ্টায় বাম নেতৃত্ব। আজ আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলার সময়েও সেলিমের বক্তব্যে উঠে এল রাজ্যের দুই প্রধান শক্তিধর দলের বিরুদ্ধে খোঁচা। বললেন, “ওরা কোটি কোটি টাকার প্যান্ডেলে যাচ্ছে, আমরা তোমাদের একটা কোনওরকমে লাগানো ত্রিপলের প্যান্ডেলে আসছি। তোমাদের লড়াইয়ের সঙ্গে আমরা আছি।”
বাংলার আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে গতকালই দেখা করতে এসেছিলেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সভানেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। তিনিও মাতঙ্গিনী হাজার মূর্তির পাদদেশে ও গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বেশ কয়েকটি ধরনা মঞ্চের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। আর আজ ধর্মতলার ‘ধরনা-তলায়’ সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। গান্ধী মূর্তির পাদদেশে দু’টি ধরনা মঞ্চ ও মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে পাঁচটি ধরনা মঞ্চে যান তিনি।
এদিকে বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলছেন, “চাকরিপ্রার্থীদের পাশে বামপন্থীরা গিয়ে বসে পড়েছেন। এতে কেউ কেউ মনে করছেন, মানবিক মুখের পরিচয় দিচ্ছেন। কিন্তু এভাবে রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হওয়া যায় না। লড়াই বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে, বাকিরা দর্শক। এই বাইনারি মানুষ তৈরি করে দিয়েছে।”