কলকাতা: বছর শেষে কাজের মূল্যায়ন আর তার নিরিখেই বেতন বৃদ্ধি বা পদোন্নতি, এমন নিয়ম চালু রয়েছে বহু বেসরকারি তথা কর্পোরেট সংস্থায়। একজন কর্মী কোন কাজের দায়িত্বে রয়েছেন, সেই দায়িত্ব পালন করেছেন কি না, কতটা সাফল্য পেয়েছেন, এ সব খতিয়ে দেখে কর্তৃপক্ষ, তার নিরিখেই হয় প্রাপ্তি। এবার সেই কায়দাতেই মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। দলের কর্মীরা কী কাজ করলেন, বামপন্থাকে কতটা ধরে রাখতে পারলেন, তারই হিসেব রাখবে দল। দলের অন্দরে সেই মূল্যায়নের জন্য ফর্মও তৈরি করা হয়েছে একেবারে কর্পোরেট কায়দায়। পরপর লেখা প্রশ্নের তলায় রাখা হয়েছে ফাঁকা জায়গা। সেই সাদা অংশেই লিখে দিতে হবে উত্তর।
মূলত দলের জেলা কমিটিগুলির সদস্যদের এই ফর্ম দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। ফর্ম দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। কর্মীর নাম ও কোন জেলা কমিটির সদস্য, তা লিখতে হবে শুরুতেই তারপর দিতে হবে প্রশ্নের উত্তর। শুধুমাত্র, রাজনৈতিক প্রশ্নই নয়, ব্যক্তিগত মূল্যবোধও যাচাই করা হবে এর মাধ্যমে।
প্রাথমিকভাবে প্রশ্নের তালিকায় রাজনৈতিক দায়িত্বেরই উল্লেখ রয়েছে। আপনার ওপর কী দায়িত্ব ছিল? সেই দায়িত্ব কতটা পালন করতে পেরেছেন? এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে কর্মীকে। সংগঠন পরিচালনার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা নিয়েও রাখা হয়েছে প্রশ্ন।
শেষ পর্যায়ে প্রশ্ন করা হয়েছে, পারিবারিক জীবনে কমিউনিস্ট মূল্যবোধ মেনে চলেন কি না, কমিউনিস্ট রীতি মেনে ধর্মীয় আচার বা অভ্যাস থেকে মুক্ত হতে পেরেছেন কি না। পারিবারিক জীবনে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা থেকে বেরতে পেরেছেন কি না, সেই প্রশ্নও করা হয়েছে জেলা কমিটির সদস্যদের কাছে। এছাড়া জানতে চাওয়া হয়েছে, বিয়ের মতো অনুষ্ঠানে বিপুল খরচ না করার ক্ষেত্রে কর্মীর মতামত কী?
অর্থাৎ রাজনৈতিকভাবে শুধু নয়, সার্বিকভাবে বামেরা সংস্কার চাইছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। এ নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের কেউ মুখ খুলতে চাননি, তবে বিরোধী দলের কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, এই সব প্রশ্নের কেউ যদি ভুল উত্তর দেয়, তা কীভাবে ধরা যাবে? ব্যয়বাহুল্যের মানসিকতাই বা মাপা হবে কোন মাপকাঠিতে? কত টাকা খরচ করলে বাহুল্য বলে ধরা হবে না।