কলকাতা: ‘যেখানেই বিরোধীরা মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে সেখানেই তৃণমূল গুন্ডামি মাস্তানি করছে।’ ভাঙড় ইস্যুতে এ ভাষাতেই তৃণমূল (Trinamool Congress) সরকারের বিরুদ্ধে সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমের (CPM Leader Md Selim)। গলা মিলিয়ে আক্রমণ শানাতে দেখা গেল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari)। শনিবার ছিল আইএসএফের (ISF) প্রতিষ্ঠা দিবস। সে কারণেই বড় সভারও আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সভাকে কেন্দ্র করে ভাঙড়ে অশান্তির সূত্রপাত। পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল তৃণমূল-আইএসএফ বচসা (Trinamool Congress)। বেলা বাড়তেই বচসা বদলে যায় সংঘর্ষে। প্রতিষ্ঠা দিবসে যোগ দিতে যাওয়া আইএসএফ কর্মীদের লক্ষ্য করে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ইট, পাথর, বাঁশ, শেষে বোমা। কোনও কিছুই বাদ ছিল না দুপক্ষের সংঘর্ষে। নওশাদ সিদ্দিকীর গাড়িতেও হামলার অভিযোগ ওঠে।
পাল্টা আইএসএফের বিরুদ্ধে দলীয় পার্টি অফিস ভেঙে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করে তৃণমূল। যা নিয়ে শনিবার দিনভর উত্তপ্ত থাকে বাংলার রাজনৈতিক মহল। রেশ রয়েছে রবিবার ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের দাবি, “তিনটি পার্টি অফিস ভাঙা হয়েছে। শুধু ভাঙা হয়নি। ভেঙে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে পুলিশ দুর্বল। যথেষ্ট ফোর্স ছিল না। নওশাদ সদ্দিকী এসবই পরিকল্পনা করে করছে।” যদিও অভিযোগ অস্বীকার বিধায়ক তথা আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকীর। নওশাদকে বলতে শোনা যায়, “আমরা ওরকম কাজ করি না। আর করবও না। ওরা বোম ব্লাস্ট করিয়েছিল। গুলি চালিয়ে ছিল। তার জন্য প্রশাসন আগে ব্যবস্থা নিক।” এরইমধ্যে রবিবার সকালে আরাবুল ইসলামের বাড়ির সামনে থেকে উদ্ধার হয়েছে বস্তা ভর্তি তাজা বোমা। গ্রেফতার করা হয়েছে তিন আইএসএফ কর্মীকে।
আইএসএফ-তৃণমূল সংঘর্ষ প্রসঙ্গে শাসকদলকে একহাত নিয়ে সেলিমের দাবি, “যেখানেই বিরোধীরা মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে সেখানেই তৃণমূল গুন্ডামি মাস্তানি করছে। কিন্তু ওরা বুঝছে না গুন্ডামি-মাস্তানির দিন শেষ হয়ে এসেছে। ভাঙড়ে আইএসএফ-বামপন্থীদের এতটাই শক্তি আছে যে ওখানে গুন্ডা-মস্তানদের মাস্তানি শেষ করা যাবে।” পাল্টা তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, “এটা তো দাদাগিরির জায়গা নয়। মানুষের আশীর্বাদ না পেয়ে গাজোয়ারি করে দখল করতে যাওয়া, ওগুলো চলবে না। মানুষের প্রতিরোধ হবে। পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।” অন্যদিকে গতকালের ঘটনায় ইতিমধ্যেই বহু আইএসএফ কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাও রুজু হয়েছে। দোষ প্রমাণিত হলে হতে পারে ১০ বছর পর্যন্ত জেল।