কলকাতা: উপাচার্য নিয়োগ থেকে দুর্নীতি ইস্যু, রাজ্য়ের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি থেকে প্রশাসনিক কাজ, একাধিক বিষয়ে বিগত কয়েক মাসে রাজ্য-রাজ্যপাল সম্পর্কের ফাটল ক্রমশ চওড়া হয়েছে। এদিনই আবার নবান্ন থেকে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নতুন করে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। মমতার দাবি, মুখোশের আড়ালে থেকে বিজেপির (BJP) অঙ্গুলিহেলনেই কাজ করে চলেছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। সম্প্রতি একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপচার্য নিয়ে শিক্ষা দফতেরর সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত নতুন মাত্রা পায়। খোদ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও সুর চড়িয়েছিলেন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁর ক্ষমতা নিয়ে। সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যপালের অধিকার নিয়ে একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন ওমপ্রকাশ মিশ্র, গৌতম পালের মতো শিক্ষাবিদরা। এবার ফের একবার রাজ্য়পালকে চাঁচাছোলা ভাষায় তোপ দাগতে দেখা গেল গৌতম পাল, সুবোধ সরকারের মতো শিক্ষাবিদদের।
রাজ্যপালকে একেবারে ‘ম্যাড মেন’ কটাক্ষ করতে দেখা গেল সুবোধ সরকারকে। তাঁর স্পষ্ট দাবি, বর্তমানে এক ভয়ঙ্কর অভূতপূর্ব পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছে। এর থেকে বেরনোর একমাত্র উপায় মুখ্যমন্ত্রীর আচার্য হওয়া। একটা মনস্টারের জন্য এত কিছু হচ্ছে। তার নাম গৈরিকীকরণ। একইসঙ্গে বললেন, “গভর্নর আগের দিন দুজন ভিসিকে ডেকেছেন। একজন কানপুর, আরেকজন গুজরাটের। কলকাতা এসেছিলেন গভর্নরের আমন্ত্রনে। ওনাদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চলছে।”
অন্যদিকে রাজ্যপালের অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি তথা কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য গৌতম পাল বলেন, “হঠাৎ করে রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সরিয়ে দেওয়া হল। আচার্য এভাবে নিয়োগ করতে পারেন না। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সার্চ কমিটিতে মুখ্যমন্ত্রী কোনও রাজনীতিককে মনোনীত করবেন না। শিক্ষাবিদকেই দেবেন। সার্চ কমিটি করে কেন উপাচার্য নিয়োগ করা হবে না? মাননীয় রাজ্যপালের কাছে মুখ্যমন্ত্রী আচার্য হওয়ার বিল পড়ে আছে।” তাঁর সাফ দাবি, উচ্চশিক্ষায় সঙ্কট আসলে ম্যানমেড। উচ্চ শিক্ষায় সঙ্কটের জন্য আবার কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন প্রাক্তন ইউজিসি সচিব আরকে চৌহান। তাঁর দাবি, “কেন্দ্রীয় সরকার উপযুক্ত টাকা দেয় না। কোনও গবেষণায় টাকা মেলে না। সে কারণেই দেশে গবেষণা মার খাচ্ছে।” তবে বিতর্ককে থোড়াই কেয়ার রাজ্যপালের। এবার দুর্নীতি দমনেও মাঠে নেমে পড়েছেন তিনি। খুলে ফেলেছেন স্পেশ্যাল সেল।