কলকাতা: বাগবাজারের গালিফ স্ট্রিটের হাট শহরবাসীর অতি পরিচিত। শুধু কলকাতা কেন, শহরতলি থেকেও নিয়মিত মানুষের যাতায়াত এখানে। কত রকমের পাখি, ছোট্ট আদুরে কুকুর ছানা, কান খাঁড়া খরগোশ —দেদার পশু, পাখির কেনাবেচা। কোভিডের বিধি নিষেধ শিথিল হওয়ায় এই হাট আবারও শুরু হয়েছে। আর হাট খুলতেই উপচে পড়ছে মানুষের ভিড়। রবিবারের হাট দেখে তো বোঝার জো নেই, বঙ্গবাসীর ঘাড়ের উপর করোনার তৃতীয় ঢেউ নিঃশ্বাস ফেলছে। বহু মানুষের ভিড়। মুখে মাস্ক নেই বেশির ভাগের। তৃতীয় ঢেউয়ের দোড়গোড়ায় দাঁড়িয়ে এই ছবি নিঃসন্দেহে উদ্বেগ বাড়াবে।
দুয়ারে কড়া নাড়ছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। এখনও রাজ্যে জারি রয়েছে করোনার বিধি নিষেধ। অথচ, উত্তর কলকাতার বাগবাজারের গালিফ স্ট্রিটের পশু—পাখি কেনাবেচা হাটে হাজারও মানুষের ভিড়। সামাজিক দূরত্ব বিধিও উধাও। ক্রেতা বা বিক্রেতা, অধিকাংশের মুখে নেই মাস্ক। কোভিড পরিস্থিতিতে এই দৃশ্য স্বাভাবিকভাবেই স্বাস্থ্য কর্মী থেকে চিকিৎসক, সকলের মনেই উদ্বেগ তৈরি করবে। বাজার হাট সমিতির তরফে বার বার মাইকে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের মাস্ক পরতে আবেদন করলেও তাতে যে কর্ণপাত করছেন না অনেকেই, রবিবারের হাটে তা স্পষ্ট।
এ প্রসঙ্গে শখের হাট ব্যবসায়ী সমিতির মুখ্য উপদেষ্টা কুণাল ঘোষ বলেন, “যখনই নজরে আসছে মানুষের মুখে মাস্ক নেই, সঙ্গে সঙ্গে বলে দেওয়া হচ্ছে ‘মাস্ক পড়ুন’। পশুপ্রেমী ও যাঁদের আয়ের মাধ্যম এটা তাঁদের স্বার্থে এই হাট সুস্থতার সঙ্গে চলাটা বিশেষ ভাবে দরকার।” যদিও ক্রেতা হোক বা বিক্রেতা, প্রশ্ন করলে একটাই উত্তর আসছে, “সব সময় মাস্ক পরলে তো অসুবিধা হচ্ছে। করোনা বাড়লেও কিছু করার নেই।” কোভিড বিধি মানতে হবে, মাইকে বারবার বলা হচ্ছে। তবু পরোয়া নেই।
আরও কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন এলাকার ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর বাপি ঘোষ। তিনি বলেন, “আমরা অনেক কষ্ট করে হাটটা খুলেছি। কোভিড বিধি মানতেই হবে। প্রশাসনের কাছে এ নিয়ে আমরা দায়বদ্ধ। আমরা তাদের সে আশ্বাস দিয়েছি। আমরা রীতিমতো লিখিত আকারে জানিয়েছিলাম সবরকম কোভিড বিধি আমরা মানব। আমাদের কথার প্রেক্ষিতেই প্রশাসনের তরফে এই হাট আবারও খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আমরা বিষয়টা কড়া হাতেই দেখব। আগামী রবিবার থেকে আরও কড়াকড়ি হবে। কোনও ভাবেই কোভিড বিধি অমান্য করে এখানে আসা যাবে না। সবরকম ভাবে আমরা সংক্রমণ রুখতে বদ্ধ পরিকর।” একে তো হাজারও মানুষের ভিড়। তারপর মাস্ক পরায় অনীহা। স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশের ভূমিকায় রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়দের একাংশ। সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের সম্ভাবনা যেখানে ক্রমশ প্রকট হচ্ছে, সেখানে শহরের বুকে এতটুকু সতর্কতা যদি না থাকে বিপদ মোকাবিলা আদৌ কি সম্ভব, প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। আরও পড়ুন: ভ্যাকসিনের জোড়া ডোজ়েই মাস্ক ঝোলাচ্ছেন থুতনিতে? বিপদটা কোথায় জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা