কলকাতা: ফের কলকাতায় অভিযান চালিয়ে বড়সড় সাফল্য পেল শুল্ক দফতর। বড়বাজার এলাকা থেকে প্রায় ২৮.৩৬ লক্ষ টাকার সোনার বার উদ্ধার করা হয়েছে। গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে সোমবার রাতে বড়বাজার এলাকায় অভিযান চালায় শুল্ক দফতরের আধিকারিকরা। সেখান থেকেই পাঁচটি সোনার বার উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে একজনকে আটকও করে শুল্ক দফতরের গোয়েন্দারা। পরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্দেহজনক বেশ কিছু তথ্য উঠে আসে তদন্তকারীদের হাতে। তারই প্রেক্ষিতে গ্রেফতারও করা হয় ওই ব্যক্তিকে।
চলতি মাসের ১৯ তারিখ সিঁথির মোড় এলাকা থেকে তিন কোটি টাকার সোনার-বার সহ দুই পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছিল শুল্ক দপ্তরের গোয়েন্দারা। এই ঘটনার তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, অবৈধ ভাবে বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে ওই সোনার বারগুলি নিয়ে আসা হয়েছিল শহরে। সোমবার রাতে বড়বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির সঙ্গে সিঁথির মোড়ে উদ্ধার হওয়া চক্রের কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখছেন শুল্ক দফতরের আধিকারিকরা। সোমবার উদ্ধার হওয়া পাঁচটি সোনার বারের মোট ওজন ৫৮০ গ্রাম।
পাশাপাশি দু’দিন আগেই শুল্ক দফতরের আধিকারিকরা বিবাদী বাগ এলাকা থেকে দুই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় আফগানি মুদ্রা। ২৫.৮ লক্ষ আফগানি মুদ্রা-সহ ওই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। কোথা থেকে এই বিপুল আফগানি মুদ্রা এল, তার তদন্তে নেমেছেন গোয়েন্দারা। গত শনিবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ডালহৌসি এলাকায় অভিযান চালান শুল্ক দফতরের অফিসাররা। সেখানে পাকড়াও করা হয় দুই ব্যক্তিকে। জানা যায়, কলকাতার বাসিন্দা ওই দুই ব্যক্তি পেশায় ব্যবসায়ী। তাঁদের কাছ থেকে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৫.৮ লক্ষ টাকার আফগানি মুদ্রা মেলে। এর পর দুই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে শুল্ক দফতর। এদিকে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে শুল্ক দফতরের অফিসাররা জানতে পারেন তাঁরা কলকাতাতেই ব্যবসা করলেও এই মুদ্রা এসেছে নদিয়া থেকে।
ধৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, নদিয়ার রানাঘাটের হাওয়ালা কারবারিদের মাধ্যমে তাঁরা এই বিপুল পরিমাণ আফগানি মুদ্রা পেয়েছেন। শুল্ক দফতর সূত্রে খবর, রানাঘাটের ২ জন হাওয়ালা কারবারির কাছ থেকে এই আফগান মুদ্রা আসে কলকাতায়। সেখান থেকেই ধৃতদের হাতে এসে পৌঁছেছে। কিন্তু কোথা থেকে এ রাজ্যের হাওয়ালা কারবারিরা এত আফগানি মুদ্রা পেল তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। উল্লেখ্য, আফগানিস্তান ছেড়ে প্রচুর ভারতীয় দেশে ফিরছেন। এ রাজ্যেও তাঁদের ঘরে ফিরছেন রুজিরুটির খোঁজে কাবুলে যাওয়া শয়ে শয়ে মানুষ। এঁদের মধ্যে কেউ কি এই হাওয়ালা চক্রের সঙ্গে জড়িত? সে প্রশ্নও উঠেছে ইতিমধ্যেই। একই সঙ্গে একই মাসের মধ্যে দু’বার এই বিপুল সংখ্যক সোনার বার উদ্ধার ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের। বাংলাদেশ যোগের সম্ভাবনা নিয়েও উঠছে নানা প্রশ্ন। আরও পড়ুন: ঐতিহাসিক মুহূর্ত! সুপ্রিম কোর্টে তিন মহিলা বিচারপতির শপথ তৈরি করল নয়া ইতিহাস