কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার দাবিতে যে আন্দোলন চলছে। শনিবার সেই আন্দোলন পড়ল ১০০ দিনে। আজ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির কাছ দিয়েই মিছিলে হাঁটবেন যৌথ মঞ্চের সদস্যরা। মিছিলের অনুমতি মিললেও হরিশ মুখোপাধ্যায় রোডে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছিল না পুলিশ। কিন্তু নাছোড় আন্দোলনকারীরাও। হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার পর বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা সেই অনুমতি দেন।
ডিএ মঞ্চে আজ উপস্থিত বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বললেন, “আপনারা শহিদ মিনারে আজকে ধরনার একশো দিন পূরণ করেছেন। যে চারটি দাবি নিয়ে আন্দোলন চলছে তার জন্য যৌথ মঞ্চকে কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনারা ইতিমধ্যেই দিল্লিতে দু’দিন ধরে এই রাজ্যের এই সরকারের কঙ্কালসার অবস্থা দেশবাসীর কাছে তুলে ধরেছেন। আজ চার দফা দাবিকে সামনে রেখে আপনাদের মহামিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ রাজ্যের অন্যান্য বিরোধী দল বা সংগঠনের মতো আপনাদেরও হাইকোর্ট থেকে অনুমতি নিয়ে এই মিছিল করতে হয়েছে। আপনাদের লড়াইতে জিততে হবে। এই লড়াই আপনারা জিতবেন।”
বিস্তারিত পড়ুন: Suvendu Adhikari: খুন হলেই আমাকে খবর দিন, দেহ নিয়ে কালীঘাটে ঢুকব আমি: শুভেন্দু অধিকারী
হরিশ মুখোপাধ্যায় রোডের যে পথ ধরে মিছিল যাবে সেই রাস্তা জুড়ে জোড়ে-জোড়ে মাইকে বাজানো হচ্ছে রবীন্দ্রসঙ্গীত। জয় হিন্দ ভবন থেকে বাজানো হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে কাল রাত থেকেই সেই মাইক বাজছে। এতটাই জোরে মাইক বাজছে যে, আন্দোলনকারীদের স্লোগান শোনা সম্ভব হচ্ছে না।
বিস্তারিত পড়ুন: DA Protest: স্লো-গান vs গান! DA আন্দোলনকারীদের কণ্ঠ দাবাতেই কি তৃণমূলের ২৫ বৈশাখ মহড়া?
আন্দোলনরত সরকারি কর্মী বলেন, “আমরা দাবি পূরণ করিয়ে তবে ছাড়ব। এই দাবি না মানলে আরও বৃহত্তর হবে। এখানে শ্রমজীবী মানুষ রয়েছে। ছাত্র-যুবরাও রয়েছে।”
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৪২ জনের মতোই একজন সাংসদ। এর বাইরে প্রশাসনিক পদ নেই। আমাদের কাছে খবর ছিল বাইরের লোক ঢুকিয়ে আশান্তি সৃষ্টি করা হতে পারে। এই রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন এই আন্দোলনের সঙ্গে রয়েছে। সেটা মাননীয়া জানলে ভাল হয়। আমাদের কাছে ইন্টালিজেন্সের রিপোর্ট ছিল।”
গোটা হাজরা কার্যত সরকারি কর্মীদের দখলে। চারিদিকে শুধু কালো মাথা। এলাকায় রয়েছে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা। হাজরা মোড়ে মোতায়েন সাদা পোশাকের পুলিশ, র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স।
কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রস্তুত কলকাতা পুলিশ। কালীঘাট ফায়ার স্টেশনের সামনে বিশাল পুলিশবাহিনী। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জল কামান। কলকাতা পুলিশের সব কটি ডিভিশন থেকে ফোর্স নিয়ে আসা হয়েছে।
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে কেউ মিছিল করতে পারবে না এমন লিখিত আইন আছে? মুখ্যমন্ত্রী অফিসে গিয়েছিলাম দেখা করেননি। ভারতের পরম্পরায় আছে গৃহস্থের বাড়িতে কেউ এলে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। আমরা ওনার বাড়ির অফিসে দেখা করতে চাই। সেই কারণে বেছে নেওয়া।”
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, “একটা রাজ্যের সরকারি কর্মচারিদের নিজের অধিকার রক্ষার্থে ১০০ দিন ধরে পথে রাস্তায়-কাদায়-বসে থাকতে হয়েছে। সেই রাজ্যে গণতন্ত্র রয়েছে বলে মনে হয় না। যে রাস্তা দিয়ে মিছিল করার অধিকার বিগত ১২ বছর কারোর ছিল না। সেই রাস্তা দিয়ে মিছিল করছি। দুঃখের ব্যাপার আমাদের ১০০ দিন ধরে বসে থাকতে হয়েছে।”
শনিবার ধর্মতলার ধরনা মঞ্চ থেকে মেট্রো করে হাজরা যাবেন আন্দোলনকারীরা। হাজরার দমকল কেন্দ্র থেকে হরিশ মুখার্জি রোড ও ডি এন রোড ধরে ডান দিক দিয়ে আশুতোষ মুখার্জি রোড হয়ে এসপি মুখার্জি রোড পেরিয়ে হাজরা মোড়ে এসে মিছিল শেষ হবে। বেলা ১ টা থেকে শুরু হবে মিছিল।