কলকাতা: কুণাল ঘোষের সুরে কার্যত সুর মেলালেন তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। টুইটে তিনি বলেন, “ফোঁড়ায় যখন পুঁজে ভরে এসেছে, অনতিবিলম্বে তাকে ফাটিয়ে দেওয়াই শ্রেয়। তাতে শরীর ভালো থাকে, শান্তিতে ঘুমানো যায়। একটি ফোঁড়ার জন্য গোটা শরীরকে কষ্ট দেওয়া বৃথা।”
ঠাকুমা বলতেন,
ফোঁড়া যখন পুঁজে ভরে এসেছে, অনতিবিলম্বে তাকে ফাটিয়ে দেওয়াই শ্রেয়। শরীর ভালো থাকে, শান্তিতে ঘুমানো যায়।
একটি ফোঁড়ার জন্য গোটা শরীরকে কষ্ট দেওয়া বৃথা।
— Debangshu Bhattacharya Dev (@ItsYourDev) July 28, 2022
কার্যত জমি আন্দোলনের সময়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার ভূমিকায় ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম সৈনিক ছিলেন তিনি। ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রিসভার প্রথম সারিতে ছিলেন পার্থ। ২০১১ সাল থেকেই তিনি মমতা-মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ মুখ। এরকমই একজন হেভিওয়েট মন্ত্রীর নাম এত বড় কেলেঙ্কারিতে জড়ানোর পর তৃণমূল অন্দরে ব্যাপক অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গত বৃহস্পতিবার পার্থর গ্রেফতারির পর বারংবার কুশলী অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করেছে তৃণমূল। কিন্তু ঘটনাপ্রবহ যেদিকে এগিয়েছে, তাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ানো থেকে কার্যত সরে এসেছে দল।
বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে ২৮ কোটি টাকা যখন উদ্ধার হয়েছে, তখনই TV৯ বাংলাকে ফোনে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, “বিষয়টি উদ্বেগের। লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে।” দল যে পার্থর পাশ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে, তা রাজনৈতিক সচেতকদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়। সকালেই তার প্রতিফলন ঘটে কুণাল ঘোষের টুইটেই। পার্থকে অবিলম্বে দল ও মন্ত্রিত্ব থেকে বহিষ্কার করার পক্ষে সওয়াল করেন তিনি। তিনি আরও লিখেছেন, “যদি আমি ভুল বলে থাকি, আমাকে সরানো হোক।”
সকালে একটি টুইটে সেটা লিখেছিলেন তিনি। যদিও পরে সেটি ডিলিট করে তিনি লিখে জানান, এখনও দল পার্থ ইস্যুতে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বৈঠক হবে। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাই তিনি তাঁর ব্যক্তিগত টুইট ‘ডিলিট’ করলেন বলেও উল্লেখ করে দেন।
কুণাল ঘোষ যে বক্তব্য পেশ করেছিলেন, তার সারবত্তা রয়েছে দেবাংশুর টুইটেও। নাম না করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তিনি ‘ফোঁড়া’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। সেটিকে দ্রুত শরীর থেকে বাদ দিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। নিজের ঠাকুমার পরামর্শর বিষয়টিও এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে উল্লেখ করেন তিনি। কিন্তু বিশ্লেষকদের এটাও প্রশ্ন, পার্থ ইস্যুতে দল যদি কোনও পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্তই নেয়, সেটা অত্যন্ত দলীয় স্তরে হবে। তা বলে এভাবে সামাজিক মাধ্যমে কেন তার বহিঃপ্রকাশ? এমনই প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যও।
উল্লেখ্য, লক্ষ্মীবারেরই পার্থ ইস্যুতে বড় কোনও সিদ্ধান্তের পথে তৃণমূল। এদিন বিকাল পাঁচটায় তৃণমূলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির বৈঠক। দলের সিদ্ধান্ত কি আগেভাগেই ইঙ্গিত দেওয়ার প্রক্রিয়া এটি? চর্চায় বিশ্লেষকরা।