কলকাতা: বিধাননগরের বিভিন্ন জায়গায় ডেঙ্গু নিয়ে নাজেহাল এলাকার মানুষ। ইতিমধ্যে ডেঙ্গুর বলিও হয়েছেন। কিছুদিন আগেই বাগুইআটির এক গৃহবধূর মৃত্যু হয় ডেঙ্গুতে। জমা জল, নোংরা থেকে ডেঙ্গুর মশার বাড়বাড়ন্ত। তাই এবার ছাদের উপর জমা জল খুঁজতে ড্রোন দিয়ে নজরদারি চালাল বিধাননগর পুরনিগম। পুরকর্মীরা ছাদের জমা জল সশরীরে খুঁজতে গিয়ে বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হন বলে অভিযোগ ওঠে। তাঁদের বাড়ির ছাদে উঠতে দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ। সেই কারণেই ড্রোন উড়িয়ে ডেঙ্গুর মশা খুঁজতে নামল বিধাননগর পুরনিগম।
ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বিধাননগরে খুব একটা কম নয়। কোথাও জল জমে রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে একাধিক বার বিধাননগর পুরনিগমের তরফ থেকে অভিযান চালানো হয়েছে। নানা প্রচারও করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে মশার তেল, ব্লিচিং পাউডার। কিন্তু বাধা পড়েছে একটি জায়গায়।
তা হল বিধাননগরের বাড়িগুলির ছাদে জমা জল খোঁজার ক্ষেত্রে। বিধাননগরে বিভিন্ন ব্লকে বাড়ির ছাদে ফুলের টব, পরিত্যক্ত জিনিসপত্রের মধ্যে জমা জল আছে কি না খতিয়ে দেখার জন্যে বাড়ির ছাদে উঠতে অনুমতি দেওয়া হয় না পুরকর্মীদের।
সেই কারণেই এবার বিধাননগর পুরনিগমের তরফ থেকে ড্রোন ব্যবহার করা হল। স্বয়ং বিধাননগর পুরনিগমের প্রশাসক কৃষ্ণা চক্রবর্তী দাঁড়িয়ে থেকে তদারকি করেন। যাদের বাড়ির ছাদ থেকে জমা জলের চিত্র ধরা পড়ছে তাদের নোটিস পাঠানো হচ্ছে।
এদিন কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, “একাধিক বাড়ির ছাদে জমা জল দেখা গিয়েছে। বেশ কয়েকজনকে নোটিস পাঠানো হল। আরও পাঠানো হবে। তিন চারদিন তাদের সময় দিয়েছি। তারপরই আমি লোক পাঠাব। কারণ আমার কাছে সাধারণ মানুষ আগে। আমাদের মানুষ বিশ্বাস করে, ভরসা করে এখানে এনেছে। আমাদের দায়িত্ব তাদের পাশে থাকা। আমাদেরও মানুষের কাছে আবেদন আপনারা পাশে থাকুন। আপনাদের ভালর জন্যই আমরা এই কাজটা করছি।”
ডেঙ্গুর উপসর্গ
যে কোনও রোগেরই উপসর্গ সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে রোগ মোকাবিলার প্রথম ধাপটাই আপনি জেনে গেলেন। উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবা পেতে সময় মতো রোগ নির্ণয় করা দরকার। চোখের ব্যথা, বমি বমি ভাব, মাথাব্যথা, বমি, হাড়ের ব্যথা, ফুসকুড়ি, পেশী ব্যথা, অস্বাভাবিক রক্তপাত, জয়েন্টে ব্যথা, ক্লান্তি বা অস্থিরতার মতো লক্ষণগুলি দেখা দিলে সতর্ক হোন। এগুলি ডেঙ্গুর উপসর্গ।
ডেঙ্গুর চারটি সেরোটাইপের হদিশ মিলেছে। এর মধ্যে বিপদজনক ডেন ২ ও ডেন ৩। এ রাজ্যে এই দুই সেরোটাইপেরই বাড় বাড়ন্ত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, দেখা গিয়েছে ডেন ২ সব থেকে মারাত্মক। এর পিছনেই রয়েছে ডেন ৩। মাইক্রো বায়োলজিস্টরা বলছেন, ‘ডেন ২ ডেন ৩ মারাত্মক। অথচ এবারও শোনা যাচ্ছে এই দু’টো এ রাজ্যে ভালই পাওয়া যাচ্ছে। ডেন ৩ বেশি পাওয়া যাচ্ছে।’ সাধারণত ডেঙ্গু জ্বর ছয় থেকে সাতদিনের মধ্যে সেরে যায়। হেমারেজিক ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বেশি। ডেন ২ বা ডেন ৩ ঘটাতে পারে ডেঙ্গু হেমারেজ। এর ফলে শক সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যায়।