কলকাতা: ডেঙ্গি (Dengue) নিয়ে উদ্বেগ কমছে না স্বাস্থ্য দফতরের। চিন্তায় কলকাতা পুরনিগমও। চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। কার খামতি, কার নয়… তা নিয়ে চলছে কাদা ছোড়াছুড়ি। আর এই সবের মধ্যেই ক্ষোভ বাড়ছে আমজনতার মনে। তারই প্রতিফলন দেখা গেল রবিবাসরীয় কলকাতায়। কলকাতা পুরনিগমের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত নিমতলা ঘাট স্ট্রিট। এলাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। এই রাস্তার ধারেই রয়েছে প্রায় সাড়ে ছ’কাঠার একটি পরিত্যক্ত জমি। আর তা নিয়েই ক্ষোভ স্থানীয় বাসিন্দাদের। জমির মধ্যে জমে উঠেছে আবর্জনার স্তূপ। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, দিনের পর দিন এখানে জমছে আবর্জনা। স্থানীয় বাসিন্দাদের আতঙ্ক, এই পরিত্যক্ত জমিই হয়ে উঠছে ডেঙ্গির জীবাণুবাহী মশার আঁতুড়ঘর।
এই সবের প্রতিবাদেই রবিবার সকালে রাস্তার মাঝে টায়ার, বাঁশ, কাঠে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধে বসেন এলাকার বাসিন্দারা। বিক্ষোভের জেরে দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ হয়ে থাকে নিমতলা ঘাট স্ট্রিট। এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, কিছু অসচেতন মানুষের জন্য এই জমি আমাদের বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জমির মালিক দীর্ঘ বছর ধরে বেপাত্তা বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। কলকাতা পুরনিগমের তরফে এই জমিটি দুই বার পরিষ্কার করা হয়েছে, কিন্তু তারপরও আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কলকাতা পুরনিগমের তরফে কোনও নজরদারি রাখা হচ্ছে না বিষয়টির উপর। আর সেই কারণে আবর্জনা ফেলার পরেও পার পেয়ে যাচ্ছে একাংশের মানুষ। এদিকে ডেঙ্গির চোখরাঙানি রয়েই গিয়েছে কলকাতা পুরনিগমের বেশ কিছু এলাকায়। এই ২৪ নম্বর ওয়ার্ডেও আশপাশের বহু বাড়িতে অনেকে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে এমন জটিল পরিস্থিতিতে চিন্তায় পড়েছেন এখানকার বাসিন্দারাও।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে কলকাতা পুরনিগমের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইলোরা সাহা জানাচ্ছেন, “এটি অনেকদিনের পুরনো ব্যাধি আমাদের ওয়ার্ডের। ওই জমিটির মালিককে এর আগেও বহুবার নোটিস করা হয়েছে। জায়গাটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন, কিন্তু তারপরও আমরা পুরনিগমের থেকে বড় ডাম্পার গাড়ি লাগিয়ে তিন বার ওই জায়গাটি পরিষ্কার করিয়েছি। এখন যেহেতু ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়ছে, তাই ওই জায়গাটি পরিষ্কার করা নিয়ে মালিকানার সঙ্গে চাপানউতোর চলছে। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা প্রতিনিয়ত স্প্রে করেন। কিন্তু ওই জায়গাটি যে পুরনিগম পরিষ্কার করবে, তা নিয়ে একটি আইনগত সমস্যা চলছে। ব্যক্তিগত মালিকানায় যে জায়গা, তার তো একটি দায়িত্ব থাকা উচিত। তাঁকে তিনবার নোটিস করেছে পুরনিগম, ফোন করা হয়েছে। তিনি তাঁর দায়িত্ব এড়িয়ে যাবেন কেন? আইনি সমস্যা যদি থাকে, সেটি তাঁর ব্যক্তিগত সমস্যা। এলাকার মানুষ তার জন্য কেন দুর্ভোগ সহ্য করবে?”