Dilip Ghosh on Abhishek Banerjee: ‘মন্দিরে যাওয়ার পরম্পরা কার? বিজেপিকেই ফলো করা হচ্ছে…’

Abhishek Banerjee: বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে দেখা গিয়েছিল, বিজেপি নেতারা বিভিন্ন সময়ে প্রচারে এসে দলের নিম্নস্তরের কর্মীদের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজন করেছেন।

Dilip Ghosh on Abhishek Banerjee: 'মন্দিরে যাওয়ার পরম্পরা কার? বিজেপিকেই ফলো করা হচ্ছে...'
অভিষেককে নিশানা দিলীপের, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 03, 2022 | 8:44 AM

কলকাতা: ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলা জয়ের পর তৃণমূলের লক্ষ্য যে ত্রিপুরা তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সেই লক্ষ্যে সংগঠন ও জনসংযোগকে মজবুত করার লক্ষ্যে রবিবার সকালেই দু’দিনের সফরে ত্রিপুরা উড়ে গিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রিপুরা পৌঁছে চতুর্দশা মন্দিরে পুজো দেন অভিষেক। আর তাতেই তাঁকে নিশানা করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।

প্রবীণ বিজেপি নেতার কথায়, “তৃণমূল এখন বিজেপিকে ফলো করছে। মন্দিরে যাওয়ার পরম্পরা কার? বিজেপির। এখন সেই বিজেপিকেই অনুসরণ করছে তৃণমূল। কর্মীদের বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন জেলায় জেলায় আমরা ভাত খেয়েছি , বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে। কারণ, তাতে খরচ কম হয়, আর দলের কর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। এটা একটা ভারতীয় পরম্পরা। এর সঙ্গে রাজনীতি যুক্ত না করলেই ভাল। শুধু রাজনীতির উদ্দেশ্যে কেউ যেন এমন কাজ না করেন।”

প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে দেখা গিয়েছিল, বিজেপি নেতারা বিভিন্ন সময়ে প্রচারে এসে দলের নিম্নস্তরের কর্মীদের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজন করেছেন। সেই তালিকায়  ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাও। ছিলেন অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এরপর,  তৃণমূল সুপ্রিমোকেও দেখা যায় চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে চা তৈরি করতে কিংবা মাংস রান্না করতে দোকানিদের সঙ্গে।

আগামী ২০২৪-এর লক্ষ্যে এখন থেকেই ঘুঁটি সাজাচ্ছে তৃণমূল। তাই ভিনরাজ্যেও পা পড়েছে ঘাসফুল শিবিরের।  তৃণমূল ত্রিপুরাতে পা রাখার পর থেকে বারবার উত্তর পূর্বের এই রাজ্যে রাজনৈতিক সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। অনেকবার বিজেপি ও তৃণমূল সংঘর্ষে আগরতলার রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়েছে। ত্রিপুরার পুর নির্বাচনে কোনও আসন জয় না পেলেও ভোট বাড়িয়েছে তৃণমূল।

রবিবার, চতুর্দশা মন্দিরে পুজো দেওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন অভিষেক। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আশাপাশ থেক মাইকে ‘জয় শ্রী রাম’ ও বিজেপিতে থাকাকালীন বাবুল সুপ্রিয়র গলায় ‘এই তৃণমূল আর না’ গান বাজতে শোনা গিয়েছে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক বলেন, “নতুন বছরের শুরুতেই ঈশ্বরের আশীর্বাদ নিয়ে এবং এই মন্দিরে আসতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য বলে মনে করছি। সমগ্র ত্রিপুরাবাসীর মঙ্গল কামনা করছি। আমরা ত্রিপুরা মাটি থেকেই আগামী দিন বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করব।

তাঁর আরও সংযোজন, “ত্রিপুরাতে তৃণমূল এক ইঞ্চি জমি ছাড়বে না। যুদ্ধক্ষেত্রে তৃণমূল থাকবে। তিন মাস ধরে তৃণমূল ত্রিপুরাতে কার্যকলাপ শুরু করেছে। নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গিয়েছে, অবাধ সন্ত্রাসের মধ্যেও ভাল ফল করেছে তৃণমূল। প্রার্থীরা যেখানে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি, সেখানে আমরা রাজ্যে ২৪ শতাংশ ভোট পেয়েছি। আগরতলাতে তৃণমূল ২০ শতাংশ ভোট পেয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের এখনও এক বছর বাকি। একবছরে অনেক কিছু হবে।”

সাংবাদিকদের সঙ্গে অভিষেকের কথোপকথনের সময় মন্দিরের আশাপাশে মাইকে ‘জয় শ্রী রাম’ গান বাজানো হচ্ছিল। সেই নিয়েও বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করেন অভিষেক। তিনি বলেন, “আমি মন্দিরে পুজো দিতে এসেছিলাম। যারা নিজের হিন্দু ধর্মের ধারক ও বাহক বলে মনে করেন, তার আমাকে জব্দ করতে গিয়ে ভগবানকেও ছাড়ছে না। ডিজে বক্স বাজানো হচ্ছে। বিপ্লব দেব দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। আমাদের কর্মীদের মারা হচ্ছে, পার্টি অফিস ভাঙচুর হচ্ছে। পিপিলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে। মগের মূলুকে পরিণত হয়েছে ত্রিপুরা।”

অভিষেক জানিয়েছেন, ”বিজেপির বিরুদ্ধে একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়ছেন, তৃণমূল লড়ছে। এখানে কোনও কাজ হয়নি। রাস্তাঘাটের অবস্থা খারাপ। কলেজ ইউনিভার্সিটি কিছুই হয়নি। বাংলার উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন করা মানায় না।” বিপ্লব দেবকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্য “সাহস থাকলে রিপোর্ট কার্ড নিয়ে আমার মুখোমুখি বসুন। আমি বলব বাংলায় কী উন্নয়ন হয়েছে, আর আপনি বলবেন ত্রিপুরাতে কী উন্নয়ন হয়েছে।”

আরও পড়ুন: Siliguri Municipal Election: নির্বাচনে আদর্শ বিধি ‘ভেঙে’ জনসংযোগে গৌতম, কমিশনে নালিশ পদ্মের