কলকাতা: কলকাতা পুরসভার মেয়র প্রার্থী হিসাবে নাকি ভাবা হচ্ছে বাবুল সুপ্রিয়কে। রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা। কিন্তু এই সব রটনা নাকি ‘লোককে খাওয়ানোর জন্যই’। এমনটাই মত বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের।
মঙ্গলবার নিউটাউনের ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। মেয়র পদপ্রার্থী হিসাবে বাবুলের নাম প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “তৃণমূল কিছুই করবে না বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে। কিছুই দেবে না শুধু ঝুনঝুনি দেবে। কাকে করবে ওঁদের ব্যাপার।”
বাবুল-দিলীপ টানাপোড়েন রাজনৈতিক মহলে চর্চিত। কলকাতার বাবুল সুপ্রিয় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে দিলীপ বলেন, “বাবুল সুপ্রিয় কলকাতায় কবে কাজ করেছেন? ওঁ ওখানকার ভোটারও নন।” এরপরই সাংবাদিকদের উদ্দেশে এই প্রসঙ্গের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, “ওটা আপনাদের খাওয়ানোর জন্য করা হয়েছে, ওটা কিছুই হবে না।”
সম্প্রতি রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়, কলকাতায় মেয়র পদপ্রার্থী হিসাবে বাবুলকে ভাবা হচ্ছে। শীর্ষ নেতৃত্ব তথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দের তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে। প্রসঙ্গত, এর আগেও বাবুলকে একাধিকবার কটাক্ষ করেছেন দিলীপ ঘোষ। সরাসরি বাবুলকে তোপ দেগে বলেছিলেন, “হ্যাঁ, একটা ব্যাঙ কোথাকার! যতদিন বিজেপিতে ছিলেন ততদিন বিজেপির ব্যাঙ ছিলেন। বিজেপির মতো মহাসমুদ্রে টিকতে পারেননি। তাই ডোবায় গিয়ে ডুব দিয়েছেন।” পাশাপাশি, দিলীপ আরও বলেন, “যে বা যাঁরা দল ছেড়ে যাচ্ছেন তাঁদের ভয় দেখিয়ে বা প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাঁদের যাওয়ায় বিজেপির কোনও ক্ষতি হবে না।”
দলে থাকতেই দিলীপ-বাবুল সম্পর্ক বিশেষ ভাল নয়। তৃণমূলে সদ্য যোগদানের পর দিলীপ ঘোষকে বর্ণপরিচয় উপহার দেওয়ার কথাও বলেন বাবুল। পাল্টা তাঁকে ‘রাজনৈতিক পর্যটক’ বলে আক্রমণ করেন দিলীপ। এমনকী, বাবুলের দলত্যাগের পর দিলীপ বলেছিলেন, “উনি তারকা। দলের হননি কখনও। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। আবেগ দিয়ে রাজনীতি করেন।”সেপ্টেম্বরেই সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন বাবুল সুুপ্রিয়। তার আগেই বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করেছিলেন তিনি।
দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর বিজেপিতে থাকলেও সংগঠনের সঙ্গে গাঁটছড়া কখনই মজবুত হয়নি বাবুলের। মন্ত্রিত্ব হারানোর পর যে বিষয়টি আরও বিপক্ষে যায় আসানসোলের সাংসদের। এমন কানাঘুষোও শোনা যায় যে, বঙ্গ বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁর ভূমিকায় খুব একটা সন্তুষ্ট ছিলেন না। যে কারণে মন্ত্রিত্ব হারা বাবুলকে সংগঠনের কোনও ভূমিকাতেও দেখা যায়নি। ফলে পদ্ম ঘরে ক্রমশই কোণঠাসা হয়ে পড়ছিলেন এই গায়ক-সাংসদ।
মন্ত্রিত্ব হারানোর পর তিনি নিজে এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন যে তার বহিঃপ্রকাশ সোশ্যাল মিডিয়াতেই বারংবার দেখা যায়। সঙ্গে বাবুল এটাও দাবি করেন যে তিনি কখনই বিজেপি ছাড়া অন্য কোনও দলকে সমর্থন করবেন না। যদিও সেসব এখন অতীত। আপাতত নতুন ছকে বাবুল। একদা প্রতিপক্ষ অভিষেকের হাতে হাত রেখে নতুন পথ চলার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। বাবুলের কথায়, “প্রথম একাদশে সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি মমতা দিদি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।”
অভিষেকের সঙ্গে বাবুলের রাজনৈতিক রসায়নও এখন বঙ্গ রাজনীতিতে অত্যন্ত চর্চিত বিষয়। তবে এসবকেই ‘লোক খাওয়ানো’ বলে কটাক্ষ করেছেন দিলীপ ঘোষ।
আরও পড়ুন: বৃষ্টি নাকি কমবে তাপমাত্রা? আজ থেকে কলকাতার আবহাওয়ায় কীরকম পরিবর্তন?