কলকাতা: ‘মোমবাতি দেখিয়ে পেট চলত…’। রাজ্যের একের পর এক গণধর্ষণের ঘটনা আর তাতে বুদ্ধিজীবীদের নিশ্চুপ থাকা নিয়ে কটাক্ষ করলেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার নিউটাউনে প্রাতঃভ্রমণে গিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। রাজ্যে গত এক সপ্তাহের মধ্যে ঘটে যাওয়া চারটি গণধর্ষণ ও ধর্ষণের ঘটনা, তারও আগে মাটিয়া ধর্ষণকাণ্ডে রাজ্য তোলপাড়। বিরোধীরা সরব। কিন্তু এক্ষেত্রে উল্লেখ্যযোগ্যভাবে কোনও মতই ব্যক্ত করতে দেখা গেল না কোনও বুদ্ধিজীবীকে। আগে এই ধরনের ঘটনায় বাংলার বুকে একাধিক মোমবাতি মিছিলে বুদ্ধিজীবীদের মুখ দেখা যেত। এখন সে সব অতীত।
মূলত হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ড নিয়েই প্রশ্ন করা হয়েছিল দিলীপ ঘোষকে। তিনি বলেন, “মোমবাতি দেখিয়ে পেট চলত। পেটে এত চর্বি হয়ে গিয়েছে, আর হাঁটতে অসুবিধা হয়ে গিয়েছে। মোমবতি দেখিয়ে আগে দোকান চলত এখন মোমবাতি দেখালে দানাপানির অসুবিধা হয়ে যাবে।” বুদ্ধিজীবীদের নাম না করেই দিলীপের সংযোজন, “ওঁদের কাছ থেকে কিছু আশা করবেন না। সোশ্যাল মিডিয়া এখন শর্টকাট মাধ্যম হয়ে গিয়েছে।”
এক পৈশাচিক গণধর্ষণের ঘটনা রাজ্যকে তোলপাড় করেছে। গত সোমবার প্রকাশ্যে এসেছে সেই ঘটনা। বন্ধুর বার্থ ডে পার্টিতে গিয়ে ‘গণধর্ষণে’ শিকার হতে হয়েছে বছর চোদ্দোর এক কিশোরীকে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য রাতে মৃত্যু হয় কিশোরীর। দেহ জবরদস্তি জ্বালিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় নাম জড়িয়েছে প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার ছেলের। গ্রেফতার হয়েছে সে। তদন্তে নেমেছে সিবিআই। প্রতিবাদে সোচ্চার প্রধান বিরোধী দল। একটি তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে সিবিআই। কিন্তু অদ্ভূতভাবে রাজ্যের কোনও এক বুদ্ধিজীবীও এ বিষয়ে সরব হননি। দেখা করতে যাননি। বছর দুয়েক আগেও অন্তত যেটা ঘটত।
শুধু হাঁসখালিই নয়, রায়গঞ্জ, পিংলা কিংবা বীরভূমের ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই। বগটুই গণহত্যার সময়ে বেশ কয়েক জন বুদ্ধিজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল TV9 বাংলা।
কবীর সুমন স্পষ্টই বলেছিলেন, “মার্জনা করবেন, কোনও মত দেব না।” শুভাপ্রসন্ন বিষয়টা এড়িয়েছিলেন অন্য ভাবে। তিনি বলেছিলেন, “আমি তো বাইরে, ঘটনাটা জানি না।” সুবোধ সরকার বলেছিলেন, “কবিতা উৎসবে রয়েছি। বিষয়টা জানি না।” বিষয়টা জানি না বলেই এড়িয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা।
অন্যদিকে, জুন মালিয়া বলেছিলেন, “আমি শ্যুটিংয়ে ব্যস্ত আছি। এখন কথা বললে ফ্লোরে বকা খাব।” কাঞ্চন মল্লিক বলেছিলেন, “এই মুহূর্তে শটের মাঝে আছি।” আর দেব জানিয়েছিলেন তাঁর স্পষ্ট কথা, ‘আমার কিছু বলার নেই।’
বুদ্ধিজীবীরা যে এখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন, তা নজর এড়িয়ে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের শীর্ষ নেতৃত্বেরও। নাম না করেই বুদ্ধিজীবীদের বিঁধলেন দিলীপ।