কলকাতা: নেত্রী বারবার সতর্ক করেছেন। কিন্তু কোথায় থামছে দলের অন্দরের কোন্দল? এ বার দলের উচ্চ নেতৃত্বের মধ্য়ে যে ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছে তা রোধ করা যাচ্ছে কই? রাজ্যের শাসকদলের এ হেন কোন্দলে কার্যত প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্র করে যে বিতর্কের ঝড় উঠেছে তা এখনও বিদ্যমান। এত বিতর্কের মাঝেও কল্যাণ মুখ খুললেও অভিষেকের নাম আর করেননি। দলীয় সভায় কেবল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নামই করেছেন। অভিষেক প্রসঙ্গে কল্যাণের এই ‘নীরবতা’ নজর এড়ায়নি সংশ্লিষ্ট মহলের। এ বার তা নিয়েই কটাক্ষ করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
দিলীপের প্রতিক্রিয়া
ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে গিয়ে দিলীপ বলেন, “এ বাবা! ওঁ কথা না বললে হয় নাকি! ওঁ একটু কথা বলুন! এরপর শরীর খারাপ করবে। শরীর অসুস্থ করে কী লাভ! কথা বলুন কল্যাণবাবু!”
শনিবারই দলের প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূলের অন্দরের বিতর্ককে ঘিরে মন্তব্য করেছিলেন দিলীপ। বলেছিলেন, “কল্যাণ হোন বা অপরূপা পোদ্দার, কোন্দল তো নতুন কিছু নয়। এটাই তৃণমূলের কালচার।”
তৃণমূলের অন্দরের বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। সাংবাদিক বৈঠকে শমীক বলেন, “কোভিড থেকে মানুষের মন ঘোরাতে এই সব করছে তৃণমূল। অভিষেকের বিরোধিতা করা পুরোটাই প্লান্টেন্ড।”
অভিষেকের নামই নিলেন না কল্যাণ
কল্যাণ-বিতর্কে তৃণমূল (TMC)- এর স্পষ্ট নির্দেশ, দলের বাইরে আর কোনও বিবৃতি দেওয়া যাবে না। তা অমান্য করলেই রয়েছে কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি। এই আবহে অভিষেক মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের ঠিক দু’ দিন পর শনিবার সন্ধায় নিজের সাংসদ এলাকার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই অনুষ্ঠানে তৃণমূল সুপ্রিমোর ঢালাও প্রশংসা শোনা গেল সাংসদের গলায়। জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখান পথই তাঁর পথ। তবে অভিষেক নিয়ে আর কোনও মন্তব্য করেননি তিনি। স্পষ্টই বলেন, “আমাদের কাজের মূল প্রেরণার নাম আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের শিখিয়েছেন মানুষের পাশে থাকতে হবে। মানুষকে নিয়ে সঙ্গে থাকতে হবে। মানুষের ব্যথা যন্ত্রণাকে বুঝতে হবে।”, এদিন একবারের জন্যও অভিষেকের নাম মুখে আনেননি বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা।
তৃণমূলের নির্দেশ
কল্যাণ-বিতর্কে সাংবাদিক বৈঠকে কড়া হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে অনেকেই বিবৃতি, পাল্টা বিবৃতি দিচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও লিখছেন। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আমি নিষেধ করেছিলাম। কোনও মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে বলেছিলাম। কিন্তু শোনেনি।’ কেবল পার্থই নন, তৃণমূলের সকল সাংসদদের সতর্কবার্তা দিয়েছেন লোকসভার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছেন, দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করা যাবে না।
আরও পড়ুন: Madan Mitra on TMC Clash: কখনও অভিষেককে খোঁচা, কখনও ভাই! ‘মদনবাণে’ বিদ্ধ তৃণমূল