West Bengal Assembly: ‘ডোন্ট টক রাবিশ…’ বিধানসভায় শুভেন্দুকে বললেন মমতা

সৌরভ গুহ | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Jul 31, 2023 | 4:20 PM

West Bengal Assembly: মণিপুর ইস্যুতে বিধানসভায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নজিরবিহীন বিতণ্ডা। শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে মমতা বললেন, 'ডোন্ট টক রাবিশ...'

West Bengal Assembly: ডোন্ট টক রাবিশ... বিধানসভায় শুভেন্দুকে বললেন মমতা
বিধানসভায় মমতা-শুভেন্দু মুখোমুখি
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ: আঁচ আগেই করা গিয়েছিল। বাস্তব তার থেকেও বেশি তপ্ত হল বিধানসভা। মণিপুর ইস্যুতে বিধানসভায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নজিরবিহীন বিতণ্ডা। শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে মমতা বললেন, ‘ডোন্ট টক রাবিশ…’।  পাল্টা শুভেন্দু দিলেন সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারি।

সোমবার বিধানসভায় মুখোমুখি হন মমতা-শুভেন্দু। প্রেক্ষাপট নারী নির্যাতন। মণিপুর ইস্যুতে যে তৃণমূল সরব হবে, তা পূর্ব নির্ধারিত ছিল। পাল্টা বাংলায় নারী নির্যাতন নিয়ে সরব হয় বিজেপি। তা নিয়ে বাগ-বিতণ্ডায় তপ্ত হয়ে ওঠে বিধানসভা। প্রথমে নারী নির্যাতন ইস্যুতে বিধানসভায় ২ ঘণ্টা আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা কমে দুপক্ষের জন্য নির্ধারিত হয় এক ঘণ্টা। তৃণমূলের তরফে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাই বলেন। আর বিজেপির তরফে বলেন করেন বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পাল, শ্রীরূপা মিত্ররা।

তবে শুরু থেকেই রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর একটাই বক্তব্য ছিল, “মণিপুর ইস্যুতে এখানে আলোচনা করা যায় না।” কারণ তাঁর বক্তব্য, এই মামলা সুুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। সেক্ষেত্রে কোনও রাজ্যের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে এভাবে অন্য রাজ্যের বিধানসভায় আলোচনা করা যায় না। স্পিকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনি নিজেই যেখানে বলেন, এটা বিচারাধীন মামলা, আলোচনা করা যাবে না, তাহলে আমাদের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হলে, মণিপুর ইস্যুতে কেন আলোচনা? আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব।” তখনই ক্ষিপ্ত হন স্পিকার। তিনি বলেন, “আপনি স্পিকারের চেয়ারকে হুমকি দিতে পারেন না।” মুখ্যমন্ত্রী এরপর বলতে উঠেই শুভেন্দুর উদ্দেশে বলেন, ‘ডোন্ট টক রাবিশ…’

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ইঁদুর কাটলেও রাজ্যে কেন্দ্রীয় দল আসে, বাংলায় এগোচ্ছে, তাই আপনাদের গাত্রদাহ।” এদিন বিধানসভায় বিজেপির তরফ থেকে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বাংলায় নারী নির্যাতন সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি ছবি পেশ করা হয়। সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যে ছবি বিজেপি দেখিয়েছে ওটা ফেক।” স্পিকারকে বিষয়টি দেখে নেওয়ার জন্য আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “স্পিকার স্যর আপনি ক্রস চেক করে নেবেন।” মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যে কোনও মূল্যে মণিপুরের পাশে থাকব। আমি টিম পাঠিয়েছি। আবারও পাঠাব।চোরের মায়ের বড় গলা।” জোট ইন্ডিয়া প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ইন্ডিয়া ক্ষমতায় আসবে, আপনাদের প্রতিটা কেসের বিচার হবে।”

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মণিপুর সেনসেটিভ ইস্যু। আমি যে কোনও ভাষায় বলি। আপনাদের প্রধানমন্ত্রী কখনও বাংলা বলেন ? মণিপুর স্পর্শকাতর বিষয়।” পাল্টা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু বেঞ্চে বসে বললেন, ‘বাংলা সেনসেটিভ নয়?’ ঠিক তখনই মুখমন্ত্রী শুভেন্দুর উদ্দেশে বলেন, “মুখে লিউকোপ্লাস্ট লাগিয়ে বসে থাকুন।” মমতা বলেন, “আমি আইন শৃঙ্খলা বুঝি। জাতি দাঙ্গা বুঝি। তাই আমি মণিপুর যাওয়ার জন্য হোম মিনিস্টারকে চিঠি লিখেছিলাম, যাওয়ার অনুমতি চেয়ে। মণিপুরের বহু সংস্থা বিভিন্ন প্রপোজাল পাঠিয়েছে আমাকে।”

মমতা বলেন, ” এজেন্সির উপর নির্ভর করে রাজনীতি করছে। এজেন্সি চলে গেলে বলবে দিদি বাঁচাও।” মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিবৃতি দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।তিনি বলেন, “বিদেশে যেতে পারেন আর মণিপুর যেতে পারেন না? ” বিধানসভায় তখন বিজেপি বিধায়করা প্রবল চিৎকার করতে থাকেন। বিজেপি বিধায়করা বলতে থাকেন, “তোদের পার্টি কোম্পানি হয়ে যাবে, ইন্ডিয়া থাকবে।”  হালতালি দিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা।

বিধানসভা হট্টগোল নতুন নয়, তবে এদিনের অধিবেশনে বেশ কিছু নজিরবিহীন ঘটনাও ঘটে। যখন বিধানসভায় দুপক্ষের বিধায়কদের মধ্যে চরম হট্টগোল, তখনই হঠাৎ প্রধানমন্ত্রীর ভঙ্গী নকল করে মমতা বলেন, ‘মিত্রগণ….’  মমতার আবারও খোঁচা, “ব্যাঙ হয়ে চাঁদে যাওয়ার স্বপ্ন না দেখে মণিপুরে যান…” আবারও শুভেন্দুকে খোঁচা দিয়ে মমতা বলেন, “সব আইন বোঝে, কোন হরিদাস পাল?”

তৃণমূল বিধায়করা সকলে তখন দু’হাত তুলে স্লোগান দিতে থাকেন, ‘জয় বাংলা, জয় মমতা…’ বিজেপি বিধায়করা পাল্টা টেবিল বাজাতে থাকেন। বিধানসভায় তখন চূড়ান্ত হট্টগোল। মমতা শুভেন্দুকে খোঁচা দিয়ে বললেন, ” ওঁদের মধ্যে কেউ কেউ আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তখন সে কী বলতো সেই রেকর্ড বার করলেই হবে।” মমতার বক্তৃতার শেষ লগ্নে একবারে মমতার দিকে দু’হাত জোড় করলেন শুভেন্দু। দৃশ্যত তা ব্যাঙ্গার্থক। এরপরই বিজেপির ওয়াকআউট। অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন বিজেপি বিধায়করা।

Next Article