কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন ‘উৎসবে ফিরুন’। আরজি কর কাণ্ডে বিচারের দাবিতে তখন রাস্তায় বসে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা, তখন এ কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তা নিয়ে সোচ্চার হয় নাগরিক সমাজ, নেটাগরিক। উৎসব শেষ লগ্নে। গোটা উৎসবে ধর্মতলায় অনশন মঞ্চে পুলিশের সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের বিক্ষিপ্ত অশান্তি খবরের শিরোনামে থেকেছে। পুজোর শেষলগ্নে এবার দেখা গেল রাজনীতিকরা আলোচনা করছেন পুজোর ভিড় নিয়ে। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, এমন খাঁ খাঁ করা পুজো আগে দেখেননি। তাঁর তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সামাজিক মাধ্যমে প্যান্ডেলের সামনে ভিড়ের ছবি পোস্ট করে লিখলেন, ‘এত মানুষের ভিড় দেখিনি ….’ এবার পুজোর ভিড় নিয়েই রাজনীতিকদের মধ্যে শুরু কাটাছেঁড়া।
শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, “বিষাদের মধ্যে আনন্দের পরিবেশ। আড়াই নম্বর গেট থেকে বাগুইআটি পর্যন্ত খাঁ খাঁ করছে রাস্তা। রাস্তায় লোক নেই। এ দৃশ্য আমরা দেখিনি। আমি ৪০ বছর পুজোয় সময়ে কলকাতায় যাতায়াত করেছি, এ দৃশ্য দেখিনি। মানুষ পুজো করেছে, উৎসব পালন করেনি।”
কার্নিভাল বর্জন করারও ডাক দেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে কার্নিভাল করেন, বর্জন করেন। আরজি কর থেকে জয়নগর, যদি একটুও মন নড়ে থাকে. এতে কোনও রাজনীতি নেই, তাহলে বর্জন করুন। জ্যান্ত উমাদের রক্ষা করতে পারছি না, মানুষ পুজো করেছে, কারণ হিন্দুদের সবচেয়ে বড় পুজো। কিন্তু কেউ কেউ চান, হিন্দুদের উৎসবগুলো কালচারাল প্রোগ্রাম হোক। কিন্তু মানুষের সেই উচ্ছ্বাস নেই।” গত শনিবার একটি বাড়ির পুজোতে গিয়ে একথা বলেছিলেন শুভেন্দু।
আর ঠিক তারপরই তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট করলেন। পুজোর প্যান্ডেলের সামনে ভিড়ের ছবি দিয়ে তিনি লিখলেন, “বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দূর্গাপূজা।অসুরদলনী দেবীর আরাধনায় সামিল হয় আপামর বাঙালি। সেই মিলোনৎসব বর্জনের সব অসৎ উদ্দেশ্য ব্যর্থ করে যেভাবে মানুষ উৎসবে সামিল হয়েছেন,তাতে মা দুর্গা আর সব সাধারণ মানুষের কাছে আমার প্রণাম জানাই।বিগত বছরগুলোতে এত মানুষের ভিড় দেখিনি ….”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অতীতে এভাবে পুজোর ভিড় নিয়ে রাজনীতিকরা কাটাছেঁড়া করেছেন, তেমন কথা মনে করা কঠিন। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি উৎসব বনাম আন্দোলন এই আবহের অঙ্গ হিসাবে ‘ভিড় বেশি’ আর ‘ভিড় কম’-এর লড়াই শুরু হল পুজোর শেষ লগ্নে!