কলকাতা: ‘অসুস্থতা’ ও ‘হাসপাতাল’ এ যেন সমার্থক শব্দ হয়ে উঠছে দিনদিন। গ্রেফতার হওয়ার পর অভিযুক্তদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আর্জি এ রাজ্যে নতুন নয়। এবার সেই পথেই হাঁটলেন রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্য। শনিবার তাঁকে তোলা হয়েছিল বিশেষ ইডি আদালতে। তবে তাঁর আইনজীবী জাকির হোসেন নিজের মক্কেলের জন্য জামিন প্রার্থনা করেননি বিচারকের কাছে। তবে শঙ্করের চিকিৎসার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি। যদিও, ইডির আইনজীবীর দাবি, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন নেই।
আজ আদালত কক্ষে শঙ্কর আঢ্যর আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেলের একটি কিডনি নেই। বলেন, “আমরা জামিন চাইছি না। ওনার কিডনির সমস্যা রয়েছে। একটি কিডনি নেই। হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার দরকার।” জেল হাসপাতালে চিকিৎসার সব রকম পরিকাঠামো নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তবে অভিযুক্তের এই দাবি মানতে চাননি ইডির আইনজীবী। তাঁর বক্তব্য, প্রয়োজন পড়লে ভর্তি করা হবে। তবে এখন শঙ্কর সুস্থই রয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বিচারকের সামনে এসএসকেএম-হাসপাতালে বেড আটকে পড়ে থাকার দৃষ্টান্তও এ দিন আদালতে তুলে ধরেছেন ইডির আইনজীবীরা। বলেছেন, “হাসপাতালে বেড আটকে পড়ে থাকার ঘটনা ঘটেছে। এসএসকেএম-এর ঘটনা আমাদের সকলের জানা। সেখানে তিন মাস ভর্তি হওয়ার পরও জানা যায়নি আদতে কোন অসুখ হয়েছে।” এরপর তাঁর বিচারকের কাছে সওয়াল করেন, “আজকের রিপোর্ট অনুযায়ী শঙ্কর আঢ্য সুস্থ আছেন। হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন নেই। জেলে একান্ত কোনও সমস্যা হলে চিকিৎসক সিদ্ধান্ত নেবেন। জেল কোড মেনে চিকিৎসা হবে। তখন যদি প্রয়োজন হয় সিদ্ধান্ত তখন নেওয়া হবে।” আজ শঙ্করকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানোর আবেদন ইডি-র। জেলে গিয়ে জেরার আবেদন জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
উল্লেখ্য, নিয়োগ-পুরনিয়োগ বা রেশন! দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর তাবড় তাবড় নেতা মন্ত্রীদের এসএসকেএম-এ ভর্তির থাকার ঘটনা এ রাজ্যে নতুন নয়। পার্থ-সুজয়কৃষ্ণ-জ্যোতিপ্রিয় সহ অনেকেই নিজেদের শারীরিক অসুস্থতার কারণ দর্শিয়ে ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। জ্যোতিপ্রিয় তো এখন রয়েছেন সেখানে। এমনকী, গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়া অনুব্রত মণ্ডলও ভর্তি হতে চেয়েছিলেন এসএসকেএম-এ। অভিযোগ, উঠেছে বেড আটকে রাখার। এবার ঠিক সেই পথেই হাঁটলেন শঙ্করও।