কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনের ৭৫ বছরের ইতিহাসে সর্বকালীন সেরা রেকর্ড গড়ল নির্বাচন কমিশন। ভোটের মুখে দেদার টাকা উড়ছিল চারদিকে। নগদ টাকা থেকে শুরু করে মদের বোতল, সোনা-দানা, মাদক, ভেট… রকমারি উপায়ে উড়ছিল টাকা। কিন্তু কমিশনের কড়া নজরদারিতে প্রতিদিন উদ্ধার হচ্ছে কোটি কোটি টাকার পাহাড়। কমিশনের হিসেব অনুযায়ী, ১ মার্চ থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত টানা প্রত্যেক দিন ১০০ কোটি টাকার নগদ ও অন্যান্য জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
এপ্রিলের ১৯ তারিখ প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। তার আগেই যে রেকর্ড অঙ্কের টাকা, সোনা-দানা, মদ বাজেয়াপ্ত হয়েছে, তা দেখে কার্যত চক্ষু-চড়কগাছ হওয়ারও জোগাড়। ১মার্চ থেকে ১৩ এপ্রিলের মধ্যে গোটা দেশে বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৪ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকার নগদ, মদ, সোনা-দানা, মাদক ও বিলি করার সামগ্রী। যা ৭৫ বছরের ইতিহাসে কমিশনের সর্বকালীন রেকর্ড। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় গোটা ভোট পর্বে উদ্ধার হয়েছিল ৩ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকার সামগ্রী। আর এবার প্রথম দফার ভোট শুরুর আগেই তা ছাপিয়ে গিয়েছে উনিশ সালের ভোটের সামগ্রিক পরিসংখ্যানকে।
এই মার্চ থেকে ১৩ এপ্রিলের মধ্যে সব মিলিয়ে মোট ৩৯৫ কোটি নগদ টাকা পাওয়া গিয়েছে গোটা দেশ থেকে। সঙ্গে ৪৮৯ কোটি টাকার মদ, ২ হাজার ৬৮ কোটি টাকার মাদক, ৫৬২ কোটি টাকার সোনা-দানা ও ১ হাজার ১৪২ কোটি টাকার ভেট বাজেয়াপ্ত হয়েছে এই সময়ের মধ্যে।
এখনে আরও একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন, লোকসভা ভোটের বাদ্যি বাজার আগে থেকেই সজাগ নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছিল নির্বাচন কমিশন। একেবারে ২০২৪ সালের শুরু থেকেই। এ বছরের শুরুতেই নির্বাচন কমিশনের পদস্থ অফিসাররা বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজিদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। ভোটের আগে টাকার অপব্যবহার বন্ধ করার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছিলেন তাঁরা। তার ফলে গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে নগদ, মদ, সোনা-দানা, মাদক ও বিলি করার সামগ্রী মিলিয়ে ৭ হাজার ৫০২ কোটি টাকার সামগ্রী বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। সেই অঙ্কটাও যদি যোগ করা হয়, তাহলে চলতি বছরের শুরু থেকে এপ্রিলের ১৩ তারিখ পর্যন্ত দেশজুড়ে মোট ১২ হাজার কোটি টাকার সামগ্রী বাজেয়াপ্ত হয়েছে।