কলকাতা: ছাত্র বা ছাত্রী নয়, ছেলে-মেয়ে বলতেই বেশি পছন্দ করতেন তপতী দেবী। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের প্রাক্তন প্রধান তপতী বসুর আকস্মিক প্রয়াণে তাই প্রাক্তনীরা শোকাহত। তাঁরা মানতেই পারছেন না তাঁদের প্রিয় শিক্ষিকা আর নেই। গত শনিবার সন্ধ্যায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। আজ, সোমবার তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। সোমবার সকাল থেকেই প্রথমে সুকিয়া স্ট্রিটের বাড়িতে ও পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শায়িত ছিল প্রাক্তন অধ্যাপিকার দেহ। বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী এদিন শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অধ্যাপক সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নিলেও ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগে কোনও খামতি ছিল না তাঁর। শুধু পড়াশোনা নয়, অনেকে ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়েও হাজির হতেন তাঁর কাছে। তপতী দেবীর ছেলে সাগ্নিক বসু বলেন, ‘মায়ের ছাত্র-ছাত্রীরা এখন কেউ অধ্যাপনা করছেন, কেউ সাংবাদিক। তাঁদের ছেলে-মেয়ে বলে মনে করতেন মা। পড়ুয়ারাই ছিল মায়ের সব।’ এমন আত্মিক সম্পর্কের টানেই ভিনরাজ্য থেকে কলকাতায় ছুটে এসেছেন বহু মানুষ। ত্রিপুরা, শিলচর থেকে অনেকে ছুটে এসেছেন তপতী দেবীকে শেষবার দেখার জন্য।
অধ্যাপনা করার আগে নিজে সাংবাদিকতা করতেন তিনি। অবসরের পরও নিজেকে সর্বদা ব্যস্ত রাখতেন তিনি। গত সোমবারই এক কলেজে লেকচার দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। অসুস্থতার কারণে সশরীরে উপস্থিত হতে না পারলেও অনলাইনে লেকচারও দিয়েছিলেন প্রাক্তন অধ্যাপিকা তপতী বসু।
প্রাক্তন অধ্যাপিকার ওয়েবসাইটে চোখ রাখলে চোখে পড়বে কয়েকটি লাইন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘জীবন একটা যাত্রাপথ। আমরা সবাই সেই পথের যাত্রী। কখনও কখনও কোনও যাত্রী পথ ছেড়ে চলে যান, চলে যেতে হয়…।’ তিনি সবসময় বলতেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যেই চিরকাল বেঁচে থাকব’। সেভাবেই রয়ে গেলেন তপতী বসু।