কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় গোয়েন্দা সংস্থার আতস কাচের নীচে অনেকদিন ধরেই ছিলেন বেহালার বাসিন্দা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। কখনও তাঁকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, কখনও তাঁর বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছেন গোয়েন্দা আধিকারিকেরা। অবশেষে তাঁর এই গ্রেফতারি তদন্তকে কতটা এগিয়ে দিল? বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ‘কালীঘাটের কাকু’র গ্রেফতারি আদতে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ক্রমশ ‘বড় মাছে’র দিকে জাল এগোচ্ছে বলেও মনে করছেন তাঁরা।
TV9 বাংলার মুখোমুখি হয়ে প্রাক্তন এনএসজি কর্তা দীপাঞ্জন চক্রবর্তী ক্রিকেটের সঙ্গে তুলনা টেনে বলেছেন, “সিবিআই হল শচিন তেন্ডুলকর বা রাহুল দ্রাবিড়ের মতো। এরা ধরে ধরে তদন্ত করে। আর ইডি হল বীরেন্দ্র শেওয়াগের মতো, আক্রমণাত্মক। সিবিআই সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বা কুন্তল ঘোষের মতো লোককে ঘিরে বৃত্তটা ছোট করে দিচ্ছে। এরপর আসরে নামছে ইডি।”
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, ইডি কোনও পোক্ত প্রমাণ ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করে না। সুজয়কৃষ্ণের ক্ষেত্রে তিন মাস ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তল্লাশি চালিয়ে নথি উদ্ধার করা হয়েছে। সব দেখা হয়েছে। প্রাক্তন এনএসজি কমান্ড্যান্ট দীপাঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, “এনআইএ ও ইডি কখনও পোক্ত প্রমাণ না পেলে গ্রেফতার করে না। এক্ষেত্রে অন্তত ৪০-৫০ শতাংশ সলিড এভিডেন্স পাওয়া গিয়েছে বলেই মনে হয়। এবার বয়ান নেওয়া হবে। একই প্রশ্ন বারবার করা হবে, কারণ মিথ্যা কথা বারবার একইভাবে বলা যায় না।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, গত কয়েকদিনেও সুজয়কৃষ্ণ অনেক ক্ষেত্রে স্ববিরোধী কথা বলেছেন। ফলে কথার জালে ফেঁসে যাওয়াতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
প্রাক্তন এনএসজি কমান্ড্যান্টের কথায়, “বড় মাছ জালে তুলতে সময় লাগে। আগে ছোট মাছ তোলা হোক, তারপর বড় মাছ জালে পড়বেই।” তিনি জানান, এই ধরনের বড় দুর্নীতির ক্ষেত্রে অনেক সময় বিদেশেও টাকা পাচার হয়। ফলে, ‘র’ (RAW)-এর থেকেও তথ্য় নেওয়ার প্রয়োজন হয়। বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য জোগাড় করতে সময় লাগছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
অন্যদিকে, বাম নেতা তথা আইনজীরী বিকাশ ভট্টাচার্যের দাবি, সঠিক পথে সৎভাবে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তবে সেই তদন্তের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক চাপ আছে বলে মনে করেন তিনি। তাঁর মতে, দুর্নীতির মাথায় পৌঁছনো সময়ের অপেক্ষা।