কলকাতা: একজন অবসরের পাঁচ মাস আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তার কয়েকদিন পরই যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। তারপর চলতি লোকসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরের হয়ে প্রার্থীও হয়েছেন। সেই সময়ই প্রশ্ন উঠেছিল, বিচার বিভাগে কি তাহলে বিজেপির মনোভাবাপন্ন লোকদের আনাগোনা বাড়ছে? এই প্রশ্ন ফের উঠতে শুরু করেছে সোমবার (২০ মে) থেকে। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের আরেক বিচারপতি অবসর নিয়েছেন। আর বিদায়ী ভাষণে তিনি সাফ জানিয়েছেন, অতীতে তাঁর সঙ্গে আরএসএস-এর যোগ ছিল। বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর, তিনি ফের আরএসএস-এর হয়ে কাজ করতে চান। প্রথমজন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। দ্বিতীয়জন সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি চিত্ররঞ্জন দাশ।
বিচারপতি চিত্ররঞ্জন দাশ তাঁর আরএসএস যোগের কথা জানাতেই যেন ফের ভোমরার চাকে ঢিল পড়েছে। তবে, বিচারপতি দাশ স্পষ্ট জানিয়েছেন, আগামী ২ বছর অন্তত কোনও রাজনৈতিক পদ গ্রহণ করবেন না তিনি। কিন্তু, প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রাজনীতিতে যোগ দেওয়াকে তিনি কোন চোখে দেখেন? TV9 বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বিচারপতি দাশ জানিয়েছেন, “অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রাজনীতিতে যাওয়া একেবারেই ওঁর নিজের পছন্দ। তা নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।”
তবে অতি সম্প্রতি, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে যে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন বিজেপি নেতা অভিজিৎ, তা মেনে নিতে পারেননি চিত্তরঞ্জন দাশ। TV9 বাংলাকে তিনি বলেছেন, “একজন বিচারপতির ভাষা শালীন হওয়া উচিত। অশালীন ভাষা ব্যবহার করা উচিত নয়। ওঁর যে ভিডিয়োটি ভাইরাল হচ্ছে, আমি তা দেখিনি। তাই তা নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। যদি তিনি সেখানে অশালীন ভাষা ব্যবহার করে থাকেন, তা করা উচিত হয়নি। শুধু বিচারপতি কেন, কোনও মহিলা সম্পর্কে কারও অপশব্দ প্রয়োগ করা উচিত নয়।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্যের জেরে, তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এরপরই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে শোকজ নোটিস পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। অভিজিৎ যে উত্তর দিয়েছিলেন তাতে সন্তুষ্ট হয়নি কমিশন। এদিনই কমিশন তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেছে। ২৪ ঘণ্টার জন্য তাঁর প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।