কলকাতা : সম্প্রতি বউবাজারে নতুন করে বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা দেওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। গত মে মাসের পর অক্টোবরে ফের পরপর ১০ টি বাড়িতে ফাটল দেখা দেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে বউবাজারের মানুষের ভবিষ্যৎ নিয়ে। এরই মধ্যে সামনে এল বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট। বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরনিগমের মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, ওই এলাকার ৭১ টি বাড়ি ভেঙে দিতে হবে।
২০১৯-এর পর থেকে বউবাজার মেট্রো প্রকল্পের বিপর্যয় হয়েছে তিনবার। দ্বিতীয় বারের বিপর্যয়ের ঠিক কয়েক মাস পরে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে একটি অন্তর্বর্তীকালীন রিপোর্ট পেশ করা হয়। সেই রিপোর্টে বলা হয়, বউবাজার মেট্রো প্রকল্প যেখানে হচ্ছে সেখানে ৭১ টি বাড়ি ভেঙে ফেলতে হবে। কলকাতা পুরনিগমে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি একটি রিপোর্ট জমা দেয়। সেই রিপোর্ট ঘিরে এবার চরম সঙ্কট তৈরি হয়েছে। আর সেই রিপোর্ট নিয়ে আলোচনার মধ্যেই চলতি মাসে ফের বিপর্যয় ঘটে গিয়েছে।
ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ওই বাড়িগুলির অবস্থা ভাল নয়। কিন্তু যতটা জায়গার ওপর বাড়িগুলি তৈরি হয়েছে, ততটা জায়গায় এখন আর বাড়ি তৈরি করা সম্ভব নয়। তাই ওই বাড়ির বাসিন্দাদের জন্য ফ্ল্যাটের ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যদিকে, ওই এলাকার পুর প্রতিনিধি বিশ্বরূপ দে জানিয়েছেন, যাঁরা এতদিন বাড়িতে থেকেছেন, তাঁরা ফ্ল্যাট নিতে রাজি হবেন না। সে ক্ষেত্রে কী সমাধান হতে পারে, তার জন্য বাড়ির মালিকদের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন বলে মনে করছেন ফিরহাদ।
তৃতীয়বার অর্থাৎ চলতি মাসে বউবাজারের বাড়িগুলিতে ফের ফাটল দেখা দেওয়ার পর যাদবপুরের বিশেষজ্ঞরা আবারও খতিয়ে দেখছেন পরিস্থিতি। ফের একটি রিপোর্ট জমা দেবেন তাঁরা। সেই রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে পুরনিগমের তরফে। ওই বৈঠকে বাড়ির মালিক ছাড়া থাকবেন, কলকাতা পুরনিগম, কেএমআরসিএল, কলকাতা পুলিশের প্রতিনিধিরা।
উল্লেখ্য, মেট্রোর কাজের জন্য বারবার ফাটল ধরছে বউবাজার অঞ্চলের একাধিক বাড়িতে। ঘর ছাড়তে হয়েছে অনেককেই। যাঁরা এখনও রয়েছেন, তাঁরা রীতিমতো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।