কলকাতা: ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে শাসকদলের তিন সাংসদ-বিধায়কের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। লালবাজার সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সাংসদ মিমি চক্রবর্তী, বিধায়ক লাভলি মৈত্র এবং শান্তনু সেনের বয়ান রেকর্ড করা হয়। একইসঙ্গে জানা গিয়েছে, যাঁর নীলবাতির গাড়ি হাঁকিয়ে ঘুরে বেড়াতেন এই কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেব, সেই মালিকেরও বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে।
অন্যদিকে, গ্রেফতারের পর ভুয়ো আইএএস পরিচয়ধারী দেবাঞ্জন দেব তদন্তকারীদের মুখোমুখি হয়ে দাবি করেছিলেন, সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার কাছে ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য ইমেল করেছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, সেই দাবির সত্যতা কতটা, তা জানতে কলকাতা পুলিশের তরফে সেরাম ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষের কাছে ইমেল পাঠানো হয়েছে। আসলে, কলকাতা পুলিশ জানতে চায়, দেবাঞ্জনের কোনও ইমেল ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছে গিয়েছে কি না।
দেবাঞ্জন সম্পর্কে প্রথম মুখ খুলেছিলেন তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। তিনি নিজেই দেবাঞ্জনের ফাঁদে পড়েন বলে অভিযোগ তোলেন। দেবাঞ্জনের টিকা-শিবির থেকে টিকা নিয়েছিলেন তিনি। অন্যদিকে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের সঙ্গে দেবাঞ্জনের ছবি ভাইরাল হয়। যা নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতর। এরপরই শান্তনু সেন থানায় অভিযোগ জানান। তাঁর বক্তব্য, এই ‘ফেক আএএস’ দেবাঞ্জন দেবের সঙ্গে তাঁর কোনও ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই। কোভিডের প্রথম ঢেউয়ের সময় বিভিন্ন সংস্থার তরফে আইএমএকে মাস্ক, স্যানিটাইজার দিয়ে সাহায্য করা হয়েছিল। আইএমএ-এর রাজ্য সম্পাদক হিসাবে তিনি সাহায্য নিয়েছিলেন মাত্র।
আরও পড়ুন: এক ক্লিকেই দেবাঞ্জনের সব কীর্তিকলাপ
পাশাপাশি সোনারপুর দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক লাভলি মৈত্র সোনারপুর থানায় অভিযোগ করেন, সম্প্রতি সোনারপুর স্টেশন সংলগ্ন চত্বরে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে নগরোন্নয়ন দফতরের পক্ষ থেকে একটি স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। যা আয়োজনের নেপথ্য ছিলেন ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের মূল হোতা হিসাবে অভিযুক্ত দেবাঞ্জন। যাঁকে সেই সময় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যুগ্ম সচিব বলেই জানতেন তিনি। সূত্রের খবর, শাসকদলের এই তিন নেতার বয়ানই রেকর্ড করেছে কলকাতা পুলিশ।