Child Death: ‘টাকা দিলেই কী সব মেটে…’, স্ত্রীর একটা সইয়ে বদলে যায় স্বামীর শুক্রাণু, এই মামলায় বিস্মিত আদালতও

Shrabanti Saha | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Mar 27, 2025 | 11:00 AM

Child Death: আইভিএফ সেন্টারের ভূমিকায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয় কমিশন। পাঁচ লক্ষ টাকার জরিমানা করা হয়। মামলার রায় দিতে গিয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আইভিএফ সেন্টারের দাবি, দানের শুক্রাণুতেই আইভিএফ হওয়ার কথা ওই দম্পতিকে জানানো হয়েছিল।

Child Death:  টাকা দিলেই কী সব মেটে..., স্ত্রীর একটা সইয়ে বদলে যায় স্বামীর শুক্রাণু, এই মামলায় বিস্মিত আদালতও
কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ দম্পতি
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

কলকাতা: দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সন্তান আসেনি কোলে। সন্তানের মুখ দেখতে IVF সেন্টারের দ্বারস্থ হন দম্পতি। অবশেষে কোল আলো করে আসে সন্তান। জীবনই বদলে যায় দম্পতির। খুদেকে নিয়ে বেশ ভালই কাটতে থাকে দিন। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যে আঁধার নামে পরিবারে। শিশু অসুস্থ হতে শুরু করে। চিকিৎসক রক্তপরীক্ষা করতে বলেন। দেখা যায়, শিশুটি রক্তজনিত জটিল রোগে আক্রান্ত। এরপর শিশুটির অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

এরপরই তৈরি হয় জটিল সমস্যা। ডিএনএ পরীক্ষায় জানা যায়, শিশু জন্ম তাঁর বাবার শুক্রাণুতে নয়, বরং হয়েছে অন্য পুরুষের শুক্রাণুর দৌলতে। এরপর শিশুটিকে বাঁচাতে মায়ের স্টেমসেল সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু তা ম্যাচ করে না। এরপর খোঁজ পড়ে সেই জৈবিক বাবার। কিন্তু তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের অভাবেই মৃত্যু হয় শিশুটির। প্রশ্ন ওঠে আইভিএফ সেন্টারের ভূমিকা নিয়ে। তদন্তে জানা যায়, আইভিএফ সেন্টারের ভুলেই শিশুর বাবার শুক্রাণু বদলে যায়।

সম্প্রতি ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট কমিশনে এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি ওঠে।  মর্মান্তিক এই ঘটনার শিকার হয়ে নিজেদের সন্তানকে হারান দক্ষিণ কলকাতার এক দম্পতি। জানা যাচ্ছে, সন্তান না হওয়ায় তাঁরা পার্কসার্কাসের কাছে সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউয়ের কাছে ওই আইভিএফ সেন্টারের দ্বারস্থ হন। তিন বারের চেষ্টায় মা-বাবা হওয়ায় স্বাদ পান ওই দম্পতি। কিন্তু তার মাঝেই ঘটে যায় ভয়ঙ্কর ঘটনা!

আইভিএফ সেন্টারের ভূমিকায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয় কমিশন। পাঁচ লক্ষ টাকার জরিমানা করা হয়। মামলার রায় দিতে গিয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আইভিএফ সেন্টারের দাবি, দানের শুক্রাণুতেই আইভিএফ হওয়ার কথা ওই দম্পতিকে জানানো হয়েছিল। দম্পতি তাতে রাজিও ছিলেন। সেই মর্মে চুক্তিপত্রে সাইনও ওই শিশুটির মা। সেই কাগজই শুনানিতে দেখায় আইভিএফ সেন্টার। যদিও সেই সই জাল করা হয়েছে বলে পালটা অভিযোগ দম্পতির।

একসময় IVF এর কোন তথ্য কোন ক্ষেত্রেই প্রকাশ করা হত না। পরে আইন আসে এই ধরণের সংস্থাগুলিকে তথ্য প্রয়োজনে দিতে হবে।(alternative reproductive technology act 2021) অভিযোগ সেই আইনের কথা উল্লেখ করে ফের ওই সংস্থার দারস্থ হন শিশুর বাবা। সংস্থা রাজি হলেও শুধু মায়ের তথ্য দেয়। কিন্তু কার শুক্রাণুর সাহায্য নেওয়া হয়েছে সেই তথ্য দেয়নি ওই সংস্থা। এই সব জটিলতার মধ্যে ২০২৩- এ মৃত্যু হয় শিশুটির। কড়েয়া থানায় ওই সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা রুজু করেন দম্পতি। মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে।

কমিশনের পর্যবেক্ষণ, কেন্দ্রীয় সহায়ক প্রজনন প্রযুক্তি আইনের গাইডলাইন অনুযায়ী, চুক্তিপত্রে স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই সই থাকার কথা। এক্ষেত্রে কেবল শিশুটির মায়ের ছিল। সেটা বৈধ নয়। সেই কারণে ওই সেন্টারকে ৫ লক্ষ টাকার জরিমানার নির্দেশ দেয় কমিশন।

আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তীর বক্তব্য, “তিন বার বিফল হয়ে সন্তানের মুখ দেখেছিলেন ওই দম্পতি। সংস্থার প্রতারণার কথা না জেনেই মা ন’ মাস গর্ভে আগলে ছিলেন সন্তানকে। বায়োলজিক্যাল বাবা না হয়েও বাচ্চার প্রাণ রক্ষার্থে দুয়ারে দুয়ারে ছুটে বেরিয়েছিলেন বাবা। তাঁর ক্ষতিপূরণ কীভাবে হবে? বাবা – মা চান তাঁদের মতো হতভাগ্য যেন কেউ না হন। নামী সংস্থার প্রতারণার শিকার যাতে আর কেউ না হয় তাই হাইকোর্টে আর্জি তাঁদের ওই সংস্থার যথোপযুক্ত শাস্তির হোক।”

Next Article