কলকাতা: ভোটের মাসকয়েক বাকি থাকতে শহরের বিদায়ী কাউন্সিলরদের ‘মুড’ বুঝে নিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় বৈঠকে বসলেন ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। বৈঠকে ছিলেন তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরও (Prashant Kishor)। সূত্রের খবর, আজকের বৈঠকে কাউন্সিলরদের একটা কথা মগজে ঢুকিয়ে দিতে চাওয়া হয়েছে। সেটা হল – আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ক্ষমতায় ফিরে আসার বিষয়ে পুরোপুরি আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই শেষ মুহূর্তে কাউন্সিলররা যাতে কোনও হটকারী সিদ্ধান্ত না নিয়ে বসেন। জোর দেওয়া হয়েছে সমন্বয়ের সাধনের উপর।
লোকসভা নির্বাচন ভোট তৃণমূলের কাছে একটা বড় ধাক্কা ছিল। পরিসংখ্যান বলছে, লোকসভা নির্বাচনে কলকাতার ৫৩টি ওয়ার্ডে বিজেপির তুলনায় পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। সেটাই যদি এবার ও বজায় থাকে তাহলে বিধানসভায় হালে পানি পেতে অসুবিধা হয়ে যেতে পারে। তাই ওই ৫৩টি ওয়ার্ডকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে শাসক শিবির। সারা বছর মানুষের পাশে থাকা সত্ত্বেও কেন এই ওয়ার্ডগুলোতে পিছিয়ে থাকতে হল শাসক শিবিরকে? এদিনের বৈঠকে এমন প্রশ্নের মুখোমুখি কাউন্সিলরদের হতে হয়, এমনটাই খবর সূত্রের। এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার পাশাপাশি দলের সকল স্তরের নেতাদের একসঙ্গে কাজ করার উপর জোর দেওয়া হয়। কোনও ভাবেই সমন্বয়ের অভাব রাখা যাবে না বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়।
সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল জেলা সভাপতি দেবাশীষ কুমার পইপই করে কাউন্সিলরদের বলেন, সব মতপার্থক্য ভুলে আসছে নির্বাচনে যেন সকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেতানোর উদ্দেশ্য নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কারণ রাজ্যে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার বিষয়ে শাসকদলের অন্দরে কোনও সন্দেহ নেই।
গত লোকসভা ভোটের বিচারে কলকাতার রাসবিহারী, শ্যামপুকুর এবং জোড়াসাঁকো বিধানসভা কেন্দ্রেও বোরো ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছিল তৃণমূল। বিধানসভা ভোটে যাতে কোনও ভাবেই এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি না হয় তা নিশ্চিত করতে দলের সকল স্তরে সমন্বয় সাধনের উপরই জোর দেওয়া হয়।
একাধিক ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড বিলি করার প্রক্রিয়া শ্লথ গতিতে চলাও মাথাব্যথার কারণ হয়ে রয়েছে শাসকদলের। মূলত তালমেলের অভাব থাকার জন্যই এটা হচ্ছে বলে আজকের বৈঠকে উল্লেখ করেন ফিরহাদ। যেন তেন প্রকারে বিধানসভা ভোটের আগে সেই কাজ সম্পূর্ণ করার নির্দেশ এদিন তিনি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ‘দিদিকে জয় শ্রীরাম বলিয়েই ছাড়ব’, চ্যালেঞ্জ রাহুল সিনহার
কাউন্সিলর ও ব্লক প্রেসিডেন্টদের করতে কী ধরনের সমস্যা হচ্ছে, তা এদিন বিশদে প্রশান্ত কিশোর জানতে চেয়েছেন বলে খবর সূত্রের। সব সমস্যার দ্রুত সমাধানেরও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে স্পষ্টভাষায় জানিয়েছেন, বিধানসভা ভোটের আগে দলের অন্দরে কোনও রকম দ্বন্দ্ব তিনি চান না। যদিও কলকাতা পুরসভার প্রায় ১২-১৪ জন কাউন্সিলর এদিনের বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন বলে খবর সূত্রের। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য দেবব্রত মজুমদার। তবে অতীন ঘোষ যিনি মাসদুয়েক আগে বেসুরো হয়েছিলেন, তিনি আজকের বৈঠকে হাজির ছিলেন।
আরও পড়ুন: ‘যার মান নেই তাঁর আবার কিসের মানহানি’, শুভেন্দু-অভিষেকের পত্রযুদ্ধ চরমে