কলকাতা: একেই বোধ হয় বলে পদে পদে ঠগ! পদ পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে একের পর এক দুর্নীতি রাজ্যে। এসএসসি থেকে ফুড কর্পোরেশন, নিয়োগ নিয়ে যখন নিয়মিত উত্তাল হচ্ছে রাজ্য। সেই সময় আবার শাসকদলের এক বিধায়কের আপ্ত সহায়কের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে টাকা হাতানোর অভিযোগ উঠল। নদিয়ার তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহা। অভিযোগ তাঁর আপ্ত সহায়কের বিরুদ্ধে। যদিও তাপস সাহা দাবি করেছেন, তাঁর কোনও আপ্ত সহায়ক নেই। তবে অভিযুক্তকে তিনি চেনেন। ইতিমধ্যেই এক প্রতারিত ব্যক্তি দুর্নীতি দমন শাখায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে এই অভিযোগপত্রে প্রথম নামটাই তৃণমূল বিধায়কের। দ্বিতীয় নাম প্রবীরকুমার কয়ালের। আগেই তাপস সাহা দাবি করেছেন, তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে তিনি বলেন, প্রবীর তাঁর আপ্ত সহায়ক নন। তাঁর ভাইয়ের মতো।
গত ২৮ এপ্রিল দুর্নীতি দমন শাখায় অভিযোগ দায়ের করেন এক ব্যক্তি। সরকারি চাকরি দেওয়ার নাম করে তাঁর কাছ থেকে টাকা হাতানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। সেই ঘটনায় শুক্রবার হাওড়ার তিন যুবককে গ্রেফতার করা হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি থেকে গ্রেফতার হন প্রবীরকুমার কয়াল, শ্যামল কয়াল ও সুনীল মণ্ডল। প্রবীর মূল অভিযুক্ত। বাকি দু’জনের বিরুদ্ধে প্রবীর কয়ালকে পালাতে সাহায্য করা ও আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে এই প্রতারণা হয় বলে অভিযোগ। সে সময় তাপস সাহা নদিয়ার পলাশিপাড়ার বিধায়ক ছিলেন। এই পাঁচ বছরে সরকারি চাকরি দেওয়ার নাম করে মানুষের থেকে প্রবীর কয়াল টাকা তোলেন বলে অভিযোগ ওঠে। প্রভাবশালীদের নাম করে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই টাকা নিতেন তিনি। অনেক ক্ষেত্রেই বিধায়ক তাপস সাহার নাম করে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষের থেকে টাকা তোলা হয় বলেও অভিযোগ।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ধৃতদের কাছ থেকে একটি প্রাথমিক স্কুলের অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার উদ্ধার হয়েছে। সেটি ভুয়ো বলেও জানা গিয়েছে। কোথা থেকে, কীভাবে এই অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার এল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এখনও অবধি প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার প্রতারণার তথ্যপ্রমাণ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে এই কাণ্ডের শিকড় যে বহুদূর ছড়িয়েছে, তেমনটাই মনে করছে তদন্তকারীরা। প্রতারণার অঙ্ক আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন: Fraud Case: সরকারি চাকরির নামে টাকা আত্মসাৎ, তৃণমূল বিধায়কের আপ্ত সহায়ক গ্রেফতার