কলকাতা: ভুয়ো সেনা অফিসার সেজে, মেজর পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠল খাস কলকাতায়। চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকি পুলিশকেও বিনা দ্বিধায় সেনা অফিসার বলে পরিচয় দেয় তারা। মঙ্গলবার দুপুরে শহরের বুকে একেবারে বলিউডি কায়দায় পাতা হয়েছিল প্রতারণার ফাঁদ। মঙ্গলবার স্ট্র্যান্ড রোড থেকে এই অভিযোগে তিন যুবককে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, বিহারের বাসিন্দা চার যুবককে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নাম করে মেডিক্যাল টেস্ট করানোর জন্য কলকাতায় ডেকে পাঠানো হয়। তারপরই সামনে আসে আসল ঘটনা।
মঙ্গলবার দুপুরে বিহার থেকে হাওড়ায় পৌঁছন চার যুবক। তারপর পঙ্কজ কুমার গুপ্তা নামে এক ব্যক্তি ট্যাক্সিতে করে চার যুবককে স্ট্র্যান্ড রোডে নিয়ে যায়। স্ট্র্যান্ড রোডের গোয়ালিয়র ঘাট এলাকায় আগে থেকেই অপর একটি ট্যাক্সিতে সেনাবাহিনীর পোশাক পরে অপেক্ষা করছিলেন মহম্মদ আকবর নামে আর এক যুবক। তিনি নাদিয়ালের বাসিন্দা বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
বিষয়টি কর্তব্যরত এক ট্রাফিক সার্জেন্টের নজরে আসে। ওই চক্রের সবার গতিবিধি সন্দেহজনক বলে মনে হয় তাঁর। এরপর তিনিই সাউথপোর্ট থানার পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশ। সন্দেহভাজন যুবকদের ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই প্ৰতরণা চক্রের পর্দা ফাঁস হয়ে যায়।
সূত্রের খবর, পুলিশের কাছে সেনাবাহিনীর পোশাক পরা মহম্মদ আকবর নিজেকে আর্মির মেজর বলে পরিচয় দেয়। ওই ‘সেনা অফিসারে’র সঙ্গে কথা বলার পর এবং তাঁর পরিচয়পত্র দেখে সন্দেহ হয় কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের। ট্যাক্সি থেকে উদ্ধার হয় বেশ কিছু ভুয়ো নথিও। যার মধ্যে কোনওটাতে লেখা রয়েছে ইন্ডিয়ান আর্মি। কিছু ফিজিক্যাল ফিটনেস পরীক্ষার নথিও রয়েছে সেখানে। বেশ কিছু ছবি পাওয়া গিয়েছে, যা চাকরি প্রার্থীদের বলেই অনুমান তদন্তকারীদের।
ঘটনা নজরে আসতেই, পুলিশের তরফে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই জওয়ান সম্পর্কে তথ্য জানতে চাওয়া হয়। সূত্রের খবর, সেনাবাহিনীর তরফে ওই নামে কোনও জওয়ান কর্মরত নয় বলে জানানো হয়। পরিচয় পত্র যথাযথ নয় বলেই জানানো হয় সেনার তরফে। এরপরেই মহম্মদ আকবর, অশোক নায়েক ও পঙ্কজ কুমার গুপ্তাকে আটক করে পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয় ওই ট্যাক্সি।
প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বিহারের বাসিন্দা ওই চার যুবকের মেডিক্যাল টেস্ট করানোর পরেই চাকরির নামে টাকা হাতানোর পরিকল্পনা ছিল এই চক্রের। এ ভাবেই দিনের পর দিন ওই প্রতারণার চক্র চলছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।