Gariahat Double Murder: খুনের আগে ৩ দিনের ছুটি নিয়েছিলেন ভিকি, সঙ্গে ধার করেছিলেন টাকাও!

Crime: কেন ছুটি নিচ্ছেন, সে প্রসঙ্গে ভিকি জানিয়েছিলেন তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন।

Gariahat Double Murder: খুনের আগে ৩ দিনের ছুটি নিয়েছিলেন ভিকি, সঙ্গে ধার করেছিলেন টাকাও!
কাঁকুলিয়া খুনে নয়া তথ্য, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 25, 2021 | 12:03 PM

 কলকাতা: মহানগরীর বুকে টান টান হত্যাকাণ্ড (Murder Case)। রুদ্ধশ্বাস সেই খুনে একের পর এক খুলছে রহস্যের দরজা। তদন্তে নেমে রোজই নিত্যনতুন তথ্যের সন্ধান পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। এ বার কাঁকুলিয়ায় সুবীর চাকি হত্যাকাণ্ডে নয়া তথ্য উঠে এল।

জানা গিয়েছে, খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ভিকি হালদার খুনের ঘটনার তিন দিন আগে নিজের কর্মস্থল থেকে ছুটি নেন। টালিগঞ্জের ওই নির্মাণ সংস্থা থেকে বেশ কিছু টাকাও ধার করেন ভিকি। কেন ছুটি নিচ্ছেন, সে প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন। এই বলেই টাকা নিয়ে যান ভিকি। খুনের পর পুরোপুরি গা-ঢাকা দেন তিনি।  সেই থেকে এখনও অধরা ভিকি। তবে তাঁর মা মিঠু ও দুই সঙ্গীকে জেরা করে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে তদন্তকারীদের হাতে।

জানা গিয়েছে, বাড়ি সারানোর নাম করেই ভিকির দুই সঙ্গী বাপি ও জাহির গাজিকে ডেকে এনেছিল মিঠু। আগে খুন করা হয়। তারপর চলে অবাধে লুঠ। খুনের দিন বাড়িতে ঢোকার পর ওপরের ঘরে চলে যান ভিকি। চালককে আগে খুন করা হয়। ওপরের ঘরে খুন করা হয় চালককে। পরে নীচে নেমে আসেন ভিকি। একতলায় ছিলেন সুবীর চাকি।

উপর থেকে খুন করে এসে নীচে সুবীরকে খুন করেন ভিকি। একজন মুখ চেপে ধরে। বাকি দু’জন হাত ও পা চেপে ধরে। খুনের পর ট্রেন ধরে এক সঙ্গে তিন জন পালায়। খুনের পর থেকে আর কেউ বাড়িতে ফেরেনি।

খুনে জড়িত ভিকির তিন সঙ্গী ছাড়াও খুনে জড়িত আরও এক যুবকের নাম উঠে আসছে। ফার্ন রোডের একটি সাইটে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করত। ওই সাইটে অনান্য কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে যান তদন্তকারীরা। ঘটনার দিন বিকেলে ভিকির সঙ্গে অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবক দেখা করতে যায় কনস্ট্রাকশন সাইটে। বেশ কিছুক্ষণ দু’জনে কথাবার্তা বলে। ওখানে কর্মরত অনান্য নির্মাণকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।

কে সেই অজ্ঞাত পরিচয় যুবক, এখন সেটাই খুঁজে পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। মিঠু হালদারের ঠিক করে দেওয়া তিন জনের বাইরে আরও একজনকে সঙ্গে নিয়ে রবিবার কাঁকুলিয়া রোডে সুবীর চাকীর বাড়িতে গিয়েছিল ভিকি।

ফার্ন রোডের ওই কনস্ট্রাকশন সাইটে আসা অজ্ঞাত পরিচয় সন্দেহভাজন যুবকের খুনের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে কিনা, ভিকি তাঁকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিল কিনা, সেই দিক খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।

খুনের আগের দিন গোটা ছক কষা হয়। মাকে ভিকি জানিয়ে যায়, খুন করে টাকা আদায় করবে সে। মা মিঠুও তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। অপরাধমনস্ক ৩ জনকে জোগাড় করে ভিকি ও মিঠু। ফার্ন রোডের সাইটে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করে ভিকি। ট্রেনেই যাতায়াত করে। মূলত ওই তিন জনের সঙ্গে ট্রেনে যাতায়াতের সূত্রেই আলাপ হয় ভিকির।

ঘটনার দিন বিকেল ৪ টে নাগাদ ট্রেন ধরে গড়িয়াহাট আসে ভিকি। মিঠু আসে তারও আগে। বাকি তিন জন পরে আসে। ভিকি তার কাজের জায়গা থেকে এক জনকে জোগাড় করে। মিঠু স্টেশনে অপেক্ষা করছিল। স্টেশনের আশেপাশের দোকান থেকেই ছুরি কিনে আনে ভিকি। তারপর সেই বাড়িতে যায়। খুনের পর মাকে ফোন করে গোটা বিষয়টি জানায় ভিকি।

মিঠু তদন্তকারীদের জানিয়েছে, ভিকি যখন ফোন করেছিল তখন বৃষ্টি পড়ছিল। বৃষ্টি বাড়তেই রাস্তা খালি হয়ে যায়। তখনই ভিকিদের বাড়ি থেকে বের হতে বলে মিঠু। গড়িয়াহাট জোড়া খুন কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত ভিকি এখনও অধরা। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে বারবার পালাচ্ছে ভিকি।

দাগী অপরাধীর মতোই ঘন ঘন ডেরা বদল করছেন ভিকি। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে কোনও আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুদের বাড়িতে থাকছেন না। পুলিশ জানাচ্ছে, এক্কেবারে সুকৌশলে পদক্ষেপ ফেলছেন ভিকি। কোনও স্বাক্ষ্য বহন করছেন না তিনি।

রবিবার গড়িয়াহাট থানা এলাকার ৭৮ এ কাঁকুলিয়া রোডের একটি তিনতলা বাড়ি থেকে সুবীর চাকি ও তাঁর গাড়ির চালক রবীন মণ্ডলের রক্তাক্ত, ক্ষত বিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে প্রথম দিকে ধোঁয়াশা থাকলেও ধীরে ধীরে এবার বোধহয় কিছু সূত্র হাতে আসছে তদন্তকারীদের। মঙ্গলবার সকালে লালবাজারের হোমিসাইড শাখার তদন্তকারীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। থ্রিডি স্ক্যানারে ঘটনার পুনর্নির্মাণের মধ্যে দিয়েই একাধিক আততায়ীর উপস্থিতির বিষয়ে এক প্রকার নিশ্চিত হন তদন্তকারীরা। অন্যদিকে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এ কথাও স্পষ্ট হয়, এই ঘটনায় বাড়ি কেনাবেচার একটা যোগ রয়েছে।

আরও পড়ুন:  Mamata Banerjee: ‘আমরা কেন ঝগড়া করব? সবটাই পলিটিক্যাল ষড়যন্ত্র’, BSF-এর ক্ষমতায়নে তোপ মমতার