কলকাতা: গড়িয়াহাটে (Gariahat) জোড়া খুনের কিনারা করতে তৎপর পুলিশ। বাড়ি বিক্রি নিয়ে মনোমালিন্যের জেরে এই কর্পোরেট কর্তা সুবীর চাকিকে (Subir Chaki) খুন হতে হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করেছিল পুলিশ (Kolkata Police)। গত দুদিন ধরে বিভিন্ন সূত্রের খোঁজ চালাচ্ছিলেন গোয়েন্দারা। বাড়ির ব্রোকার বা দালালদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য একটি তালিকাও তৈরি করেছিল পুলিশ। তবে আজ সেই জোড়া খুনের (Double Murder) তদন্তে এক মহিলা ও তাঁর ছেলেকে আটক করেছে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড (Homicide) শাখা। কিছু তথ্যের ভিত্তিতে আজ ওই মা ও ছেলেকে আটক করা হয়েছে। ডায়মন্ড হারবার থেকে তাঁদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আজই তাঁদের লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। খুনের সঙ্গে তাঁদের প্রত্যক্ষ যোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
প্রাথমিকভাবে প্রোমোটার এবং জমির দালালদের সন্দেহ করা হয়। সূত্রের খবর, এরপরই মোবাইলের সূত্র ধরে অন্য একটি লিংক খুঁজে পান গোয়েন্দা আধিকারিকেরা। সেই সূত্র ধরেই গতকাল, মঙ্গলবার রাতে ডায়মন্ড হারবারে পৌঁছে যান আধিকারিকেরা। সকালে ডায়মন্ড হারবারের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দু’জনকে আটক করে পুলিশ। এদের মধ্যে একজন সুবীর চাকির বাড়িতে আয়ার কাজ করতেন বলে জানা গিয়েছে। ওই মহিলার ভাইকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ ওই মহিলা ও তাঁর ছেলেকে ডায়মন্ড হারবার থানায় নিয়ে এসে বেশ কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশের অনুমান সুবীর বাবুর বাড়ির দালাল হিসেবে কাজ করছিলেন এরা। খুনের ক্ষেত্রে এদের ভূমিকা থাকতে পারে বলেই অনুমান পুলিশের।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকমাস ধরে মৃত সুবীর চাকি তাঁর গড়িয়াহাটের বাড়িটি বিক্রি করার পরিকল্পনা করছিলেন। রবিবারও সেই বিষয়ে কথা বলতে সেই বাড়িতে যান সুবীরবাবু। পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, বাড়ি বিক্রি নিয়ে একজনের সঙ্গে দেখা করতেই রবিবার গড়িয়াহাটের বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। তারপরই বাড়ির তিনতলা থেকে উদ্ধার হয় সুবীর বাবু ও তাঁর ড্রাইভারের দেহ।
জানা যায়, ওই বাড়িটি অনেকেই কিনতে চেয়েছিলেন। যাঁরা ওই বাড়ি কিনতে চেয়েছিলেন, তাঁদের নামের একটি তালিকাও তৈরি করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন একাধিক জায়গা থেকে বাড়ি কেনার জন্যে সুবীরবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে দেড় কোটি টাকার কমে বাড়িটি কিছুতেই বিক্রি করতে রাজি হচ্ছিলেন না তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, সেই দালালদের বুধবারই লালবাজারে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের জেরা করে তথ্য জানার চেষ্টা করবেন গোয়েন্দারা।
রবিবার গড়িয়াহাট থানা এলাকার ৭৮ এ কাঁকুলিয়া রোডের একটি তিনতলা বাড়ি থেকে সুবীর চাকি ও তাঁর গাড়ির চালক রবীন মণ্ডলের রক্তাক্ত, ক্ষত বিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে প্রথম দিকে ধোঁয়াশা থাকলেও ধীরে ধীরে এবার বোধহয় কিছু সূত্র হাতে আসছে তদন্তকারীদের। মঙ্গলবার সকালে লালবাজারের ডগ স্কোয়াড ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে পৌঁছতেই পুলিশ কুকুর বাড়িটিতে ঘোরাফেরার পরই সোজা চলে যায় বালিগঞ্জ রেল স্টেশনে। সেখানকার এক ও দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঘোরাঘুরি করে ডগ স্কোয়াডের ওই দক্ষ সদস্য। এরপরই ফের আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে চলে যায় সে। তদন্তকারীরা অনুমান করছেন, আততায়ীরা এই দু’জনকে খুন করার পর ট্রেনে চেপেই গা ঢাকা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: Uttarakhand: ৭২ ঘণ্টা অন্ধকারে! বাড়ি ফিরতে মরিয়া উত্তরাখণ্ডে আটকে থাকা বাঙালি পর্যটকরা