কলকাতা : ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসে (Republic Day 2023) হাতেখড়িটা দিয়ে ফেলতে চান তিনি। তিনি বাংলার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (Governor C.V Anand Bose)। আনন্দ আর বোস বাংলা শব্দ। আসলে বাবা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ভক্ত। তাই তাঁর নামের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে বোস। আবার তিনি নিজে কবিগুরুর একনিষ্ঠ ভক্ত। তার উপর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বাংলার। তাই চটপট বাংলাটা রপ্ত করে নিতে চাইছেন আনন্দবাবু। নিজেকে বাংলার দত্তকপুত্র বলেছেন রাজ্যপাল। বাংলার শিক্ষা সংস্কৃতিকে আত্মস্থ করতে মরিয়া তিনি। সম্প্রতি বাংলা শেখার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছিলেন। তারপরেই এল সরস্বতী পুজোর দিন হাতেখড়ির খবর। সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েছেন খোদ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। সেই খবরেই তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে বাংলার রাজ্য-রাজনীতি? এই সামগ্রিক ছবি দেখে কী ভাবছেন পদ্ম নেতারা (BJP Leaders)? অস্বস্তি কী বাড়ছে?
প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ সঙ্গে মমতার সম্পর্কের তিক্ততা বাড়েবাড়েই উঠে আসত খবরের শিরোনামে। জগদীপ ধনখড়ের দরবারের বারেবারেই রাজ্যের একাধিক ইস্যুতে অভিযোগও জানাতে যেতেন বিধানসভার প্রধান বিরোধী দলের নেতারাও। কিন্তু, সি ভি আনন্দ বোস চেয়ারে বসতেই খানিকটা বদলেছে ছবি। রাজভবনে উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকের পর রাজ্য-রাজ্যপাল-বিকাশভবন এখন থেকে একযোগে কাজ করার কথা বলেছিলেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। কদিন আগেই তাঁকে বলতে শোনা যায়, “আমাদের বৈঠকের মূল নির্যাসই হল বিরোধ নয় সমন্বয় চাই। এটাই এখন থেকে দফতরের সঙ্গে রাজভবনের ইতিবাচক সম্পর্ক হিসাবে জারি থাকবে।” রাজ্য বনাম রাজ্যপালের সংঘাতের ট্র্যাডিশন অতীত? এটা কী মানতে পারছেন বিজেপি নেতারা?
এমতাবস্থায় এবার সি ভি আনন্দ বোসের হাতেখড়ির অনুষ্ঠানে মমতার উপস্থিত থাকার খবরে আনন্দ পাওয়ার বদলে অভিমানের সুর বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পালের গলায়। তিনি বলেন, “এখন যখন বর্তমান রাজ্যপালের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এতই ভাল সম্পর্ক, তাহলে আগের সেশনে রাজ্যপালকে আচার্যের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য আমাদের জোর করে যে বিলটা পাশ করালেন ওটা আশা করি ফেরত নিয়ে নেবেন এবার।” তাহলে কী বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে ধনখড়ের যোগ্য উত্তরসূরি হতে পারছেন না আনন্দ বোস? এটাই কী বলতে চাইছেন বিজেপি নেতারা? এরইমধ্যে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আবার বলেন, “রাজ্যপালকে আমি উপদেশ দিতে পারি না। অনুরোধ করতে পারি। সরল মানুষ। শিক্ষিত মানুষ। আমার মনে হয় তাঁরও কেয়ারফুল হওয়া উচিত।” বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “জগদীপ সাহেব থাকুন বা সি ভি আনন্দ বোস সাহেব থাকুন না কেন কারও আমলেই নিয়ম বর্হিভূত কাজ হবে না। শুভেন্দুর স্পষ্ট দাবি যদি সেটা হয় তাহলে সংবিধানের রীতিনীতি ভদ্রতা মেনে আমিও যেখানে অভিযোগ জানানোর জানাব।”