কলকাতা: রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিষোদগার জারি রাখলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। সোমবার রাজভবনে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে একের পর এক ইস্যুতে সরকার ও প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান নিধি যোজনা থেকে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা এবং প্রশাসনিক অসহযোগিতা; আক্রমণ করতে কোনও কিছুই বাদ রাখেননি রাজ্যপাল। নাম না করে ডায়মন্ড হারবার কাণ্ডের জন্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও (Abhishek Banerjee) নিশানায় নিয়েছেন তিনি।
সাংবাদিক বৈঠক করে এদিন রাজ্যপাল বলেন, রাজ্যের চাষিরা যাতে বছরে ৬০০০ টাকা পায় তার জন্য ২৯টা চিঠি লিখেছি। এই যোজনায় টাকা সোজা কৃষকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যায়। পুরো দেশের চাষিরা সুবিধা পায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, এই টাকা আমাকে দাও আমি ভাগ করে দেব। রাজ্যপালের প্রশ্ন, কেন সরকার এই টাকা ভাগ করে দেওয়ার দায়িত্ব স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে নিতে চাইছে। তাঁর কটাক্ষ, এখন আবার কৃষকদের জন্য কুমিরের কান্না কাঁদছে রাজ্য সরকার।
রাজ্যপালের সাফ কথা, তিনি রাজনৈতিক সংঘাত নিয়ে ভাবিত নন। কিন্তু বাংলায় সংবিধান অমান্য করা হচ্ছে বলে তাঁর দাবি। সংবিধান রক্ষা করা রাজ্যপালের কাজ। এমনটাই বলতে শোনা যায় তাঁকে। পাশাপাশি অন্য রাজ্যের বিজেপি নেতাদের ‘বহিরাগত’ বলে দেগে দেওয়ার প্রবণতা নিয়েও সরব হন তিনি। যারা এমনটা করছেন তাঁদের জন্য রাজ্যপালের উপদেশ, সংবিধান পড়ুন ও বুঝুন।
অভিযোগের সুরে ধনখড় এদিন আরও বলেছেন, পুলিশ-প্রশাসন বেছে বেছে বিশেষ রাজনৈতিক দলের ওপর প্রহার করছে। শুভেন্দু অধিকারীর দেওয়া চিঠির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘শুভেন্দু আমায় লিখেছে। সুনীল মণ্ডল ও আমার কাছে এমন কথাই বলেছেন। রাজনৈতিক নেতাদের ওপর আক্রমণ হওয়া উচিত নয়।’ প্রসঙ্গত, বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যপালকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। যেখানে তিনি লেখেন, প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপ হিসেবে রাজ্য পুলিশ বা কলকাতা পুলিশ তাঁকে একাধিক মামলায় ফাঁসিয়ে দিতে পারে। এহেন পরিস্থিতিতে হলে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন শুভেন্দু। সেই ঘটনার কথা টেনেই আজ প্রশাসনের সমালোচনা করেছেন জগদীপ ধনখড়।
আরও পড়ুন: ‘ও যদি পাগলামি না ছাড়ে, বিশ্বভারতীর ভেতরে গিয়ে পতাকা লাগিয়ে দেব’
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে হয় এদিন পই পই করে সেই আবেদন রেখেছেন রাজ্যপাল। শান্তিপূর্ণ ভোট পরিচালনায় সরকারের ভূমিকাই যে আসল হবে, সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি ডায়মন্ড হারবারে জেপি নাড্ডার হামলার কথা উঠে এসেছে তাঁর মুখে। ঘটনার নিন্দা করে তিনি বলেন, ‘ডায়মন্ড হারবার রাজ্য সরকারের প্রধান কেন্দ্রের মধ্যে অন্যতম। ওখানে মনে হয় দেশের আইন-কানুন চলে না। প্রশাসন ভুলে গিয়েছিল রাজ্যপাল বলে কোনও বস্তু আছে। ডায়মন্ড হারবার কি কারোর ব্যক্তিগত সম্পত্তি!’ কেন্দ্রের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করি এমন তোপ দাগেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন: ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখে মিথ্যা মানায় না’, অমিত শাহকে পড়াশোনা করার উপদেশ মমতার