কলকাতা: আপাতত আলিপুর সংশোধনাগারের (Alipore Central Correctional Home) কোনও নির্মাণ ভাঙা যাবে না। রাজ্যকে অন্তর্বতী নির্দেশ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির প্রকাশ শ্রীবাস্তবের। হেরিটেজ সামগ্রী সংরক্ষণেরও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আলিপুর জেলের প্রায় ১০৮ একর জমিতে রাজ্য সরকার মিউজিয়াম করবে বলে প্রস্তাব দিয়েছিল। বন্দিদের আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ওই ঐতিহ্যবাহী বিল্ডিংয়ে আছে বিজি প্রেসের অফিসও৷ সেই হেরিটেজ প্রেস সরস্বতী প্রেসে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে রাজ্যের তরফে বলা হয়। অভিযোগ ইতিমধ্যেই অনেক নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। আদৌ সেখানে মিউজিয়াম হবে কি না, সে-সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেন মামলাকারীরা। আপাতত ওই এলাকায় কোনও নির্মাণে হাত দেওয়া যাবে না বলে এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি। আগামী ১৮ মে ফের এই মামলার শুনানি। হলফনামা জমা দেবে হিডকো।
কী নিয়ে মামলা?
প্রসঙ্গত, আলিপুর জেলের এই নির্মাণ নিয়ে দুটি মামলা দায়ের হয়েছিল। উভয়ের বক্তব্যই একই ছিল। প্রায় ১০৮ একর জমিতে এই ভবন রয়েছে। সম্প্রতি রাজ্য সরকার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এরপরই বন্দিদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছিল, সেখানে দুটি মিউজিয়াম তৈরি করা হবে। তবে দু’টি সংগ্রহশালায় কী কী থাকবে, তা পরবর্তীতে স্থির করা হবে বলে রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে। সংগ্রহশালা গড়ে ওঠার পরে বাকি অংশে কী করা হবে, তা এখনও রাজ্য প্রশাসন স্থির করেনি বলে জানানো হয়। মামলাকারীদের বক্তব্য ছিল, আদতে এখানে কী হচ্ছে, সে সম্পর্কে যেন বিস্তারিত তথ্য দেয় রাজ্য। কারণ তাঁরা অনুমান করছেন, আদৌ এখানে কোনও মিউজিয়াম হবে না।
মামলাকারীদের বক্তব্য
১৯০৬ সালে নির্মীত আলিপুর সংশোধনাগারের প্রত্যেকটা ইটে ইতিহাস লুকিয়ে। সেক্ষেত্রে সত্যিই কি মিউজিয়াম তৈরির অজুহাতে এই সংশোধনাগার ভেঙে ফেলা যায়? প্রশ্ন তোলেন মামলাকারীরা। এদিন শুনানির সময়ে মামলাকারীরা ছবি দিয়ে চিহ্নিত করে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, যে সংশোধনাগারের কোথায় কোথায় ইতিমধ্যেই ভাঙা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ভেঙে ফেলা হয়েছে এই ঐতিহ্যবাহী ভবনের বেশ কিছুটা অংশ। মামলাকারীদের সম্পূর্ণ বক্তব্য শোনার পরই আদালত নির্দেশ দেয়, আপাতত আলিপুর জেলের কোনও নির্মাণ ভাঙা যাবে না।
রাজ্যের বক্তব্য
যদিও এদিন আদালতের রায় প্রসঙ্গে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আলিপুর সংশোধনাগারে কোন হেরিটেজ ভাঙার কাজ চলছে না। আদালতকে সম্মান জানিয়ে বলছি বিরোধী পিটিশন করলে সরকারের কাছে জানতে চাওয়া হয় না। সেখানে হেরিটেজকে রেখেই নতুন করে নির্মাণ কাজ হচ্ছে। আমরা নতুন করে নির্মাণ করে কিছু করছি না। দীর্ঘদিন আবর্জনা জমে রয়েছে সেগুলো পরিষ্কার করে দিচ্ছি। আমরা জানি কীভাবে হেরিটেজ সংরক্ষিত করতে হয়। কোনও ঐতিহ্যশালী সম্পদ ভাঙা হচ্ছে না। আমরা রাজ্য সরকারের তরফের বক্তব্য যা জানানোর জানিয়ে দেব।”