M R Bangur Hospital: ‘মুখে হাওয়া দিয়ে বুকে প্রেস করি, বাবা তখনও রেসপন্স করছিল, এলেনই না চিকিৎসকরা…’, বিস্ফোরক রোগীর পরিবার
M R Bangur Hospital: পরিবারের বক্তব্য, ১১ এপ্রিল বৃদ্ধ ভর্তি হয়েছিলেন। কেন এতদিন অস্ত্রোপচার হল না?
কলকাতা: চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগে উত্তপ্ত এম আর বাঙুর হাসপাতাল। মৃতের নাম জগদীশ গঙ্গোপাধ্যায়। ৬২ বছরের ওই ব্যক্তির হাড় ভেঙে গিয়েছিল। সোমবার তাঁর অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই রবিবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে জগদীশের মৃত্যু হয়। পরিবারের বক্তব্য, ১১ এপ্রিল বৃদ্ধ ভর্তি হয়েছিলেন। কেন এতদিন অস্ত্রোপচার হল না? হাসপাতালের জবাব, “সোমবার থেকেই অর্থোপেডিক অস্ত্রোপচার এম আর বাঙুরে শুরু হয়েছে। প্রথম অস্ত্রোপচার ওই বৃদ্ধের হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়।”
ঘটনাটি ঠিক কী ঘটেছিল?
পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত ১১ এপ্রিল জগৎবল্লভপুরের বাসিন্দা জগদীশ গঙ্গোপাধ্যায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। তাঁর ডান পায়ের দুটি হাড় ভেঙে যায়। সেই থেকেই তিনি এমআর বাঙুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ, সোমবার সকালে জগদীশ গঙ্গোপাধ্যায়ের অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল। ভোর হওয়ার আগেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। তারপর তাঁর মৃত্যু হয়।
রোগীর পরিবারের অভিযোগ, রবিবার রাতে এমআর বাঙুর হাসপাতালে কোনও চিকিৎসকই ছিলেন না। ওই বৃদ্ধের মেয়ে বলেন, “আমাদের রাতে ফোন করা হয়েছিল হাসপাতাল থেকে। বলা হয়েছিল হিমোগ্লোবিন কম, রক্ত লাগবে, চলে আসুন। আমার আর আমার বাবার ব্লাড গ্রুপ এক, তাই চলে আসি। তারপর আমি দেখি বাবার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। মা চিৎকার করে উঠল, যে শ্বাস আর পড়ছে না।” রোগীর মেয়ের আরও ভয়ঙ্কর অভিযোগ, “আমরা ডাকার পর দুজন নার্স এসেছিলেন, দুবার সিপিআর করলেন। আমি আরও করতে বললাম, ওঁরা করলেন না।তারপর আমি নিজে নাক বন্ধ করে মাউথ টু মাউথ হাওয়া দিয়ে বুকে প্রেস করেছি। তখন দেখলাম ইসিজি গ্রাফ উঠছে।” সেসময় এক জনও চিকিৎসক ছিলেন না বলে অভিযোগ পরিবারের।
চিকিৎসক সংগঠনের নেতা মানস গুমটা বলেন, “যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। ওঁ যে অভিযোগ করছেন, ওঁর প্রতি আমাদের সহমর্মিতা রয়েছে। যে অভিযোগ তুলছেন, সেটা তদন্ত সাপেক্ষ। তবে আমরাও একটা প্রশ্ন তুলতে চাই। আমি আশা করবে ওঁ যেন লিখিতভাবে অভিযোগ জানান। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেন তদন্ত করে। বাঙুর হাসপাতাল বাংলার শ্রেষ্ঠ হাসপাতাল। যদি এই হাসপাতালে এটা সত্যি হয়, তাহলে তা বেদনাদায়ক।”
চিকিৎসক সংগঠনের নেতা সজল বিশ্বাস বলেন, “আমরা এখন দেখি যে রোগী যত সংখ্যক বাড়ছে, ততটা পরিকাঠামো, তত সংখ্যক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই। ডাক্তারের ঘাটতি রয়েছে। পরিকাঠামোরও ঘাটতি রয়েছে। সব দিকই খতিয়ে দেখতে হবে।”