কলকাতা: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ মিটারের মধ্যে ধর্না চলবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে পুলিশকে। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর করা মামলায় নির্দেশ হাইকোর্টের। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত সোমবার এই নির্দেশ দিয়েছেন। নাগাড়ে ছাত্র আন্দোলনের জেরে এবার কড়া পদক্ষেপ হাইকোর্টের। উল্লেখ্য, ঠিক একই নির্দেশ গত সেপ্টেম্বর মাসেও হাইকোর্টের তরফে দেওয়া হয়েছিল। সে সময় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বলেছিলেন, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাড়ির বাইরে ও বিশ্বভারতীর ৫০ মিটারের মধ্যে কোনও ধর্না চলবে না। পুলিশকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এই নির্দেশকে আবারও পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। তাঁর বক্তব্য, আদালত একবার এই নির্দেশ দিয়েছে। তারপরও কেন তা অমান্য হচ্ছে? রাজ্য সরকারকে এ বিষয়ে ভৎর্সনাও করেন। রাজ্য সরকারের এই নিয়ে বক্তব্য ছিল, যে মুহূর্তে ধর্না শুরু হয়েছে, ঘেরাওয়ের কথা শোনা গিয়েছে, সেই মুহূর্তেই ১৩ জন পুলিশ আধিকারিক সেখানে গিয়েছিলেন। বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর তরফে আইনজীবীর বক্তব্য ছিল, তাঁরা কেউই পুলিশ আধিকারিক ছিলেন না, তাঁরা সিভিক ভলেন্টিয়ার ছিলেন। তাতেই বিচারপতি বিরক্ত হয়ে বলেন, ১৩ জন না ১৩০০ জন সেটা বড় কথা নয়, প্রশ্ন এটাই কেন আদালতের নির্দেশ অমান্য হচ্ছে? তারপরই আগের নির্দেশ পুনর্বহাল করেন বিতারপতি জয় সেনগুপ্ত। উল্লেখ্য, গত শনিবারই বিশ্বভারতীর ধর্না অবস্থান উঠে গিয়েছে, তবে আন্দোলন চলছে। হাইকোর্টের নির্দেশে এবার সেই আন্দোলন আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ মিটারের মধ্যে করা যাবে না।
প্রসঙ্গত, বেশ কয়েক মাসে বার বার ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে বিশ্বভারতী। মধ্যরাতেও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। ছাত্র-ছাত্রীদের করা অবস্থান মঞ্চ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে উপাচার্যের নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে। তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন ছাত্রছাত্রীরা। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাসভবনের সামনে দীর্ঘ ২০ দিন ধরে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছিলেন বেশ কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী। তাঁদের দাবি ছিল, বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর পদত্যাগ। মঙ্গলবার বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বাসভবন থেকে বেরোনোকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। নিরাপত্তা রক্ষীদের নিয়ে গিয়ে ছাত্রদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। একাধিক দাবি-সহ সেদিন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন ছাত্ররা। কিন্তু অভিযোগ, সে সময় উপাচার্য তাঁর নিরাপত্তারক্ষীদের গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন উপাচার্য।