কলকাতা: এসএসসি(SSC)-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যের অধীনে কাজ করা চার কর্মীকে তলব কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা বা CBI-এর। সোমবার তলব করা হল দুই প্রাক্তন চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল (২০১১ জুন থেকে ২০১৩ সালের অক্টোবর) এবং প্রদীপ শূরকে (২০১৩-২০১৪)।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বর্তমানে সুবীরেশ ভট্টাচার্য রয়েছেন সিবিআই হেফাজতে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা তাদের চার্জশিটে পরিস্কারভাবে উল্লেখ করেছে, নিয়োগ দুর্নীতিতে সুবীরেশের পাশাপাশি আরও একজন মাস্টার মাইন্ড রয়েছেন। তাঁরা জানতেন কীভাবে দুর্নীতি হবে বা দুর্নীতি কীভাবে আড়াল করা যাবে। এমনকী সার্ভারে গিয়ে অযোগ্য চাকরি প্রার্থীদের নম্বর বাড়ানো হয়েছিল, ফাঁকা কাগজ জমা দিতে বলা হয়েছিল। এই সকল বিষয়ে সুবীরেশের অধস্তন কর্মীরা কতটা কী জানেন, তাঁদের মাধ্যমে কী কী কাজ হয়েছে তা জানতেই এদের আজ তলব করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, আজ সুবীরেশ ও এই চারজনকে মুখোমুখি বসিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। কারণ এই মুহূর্তে তাঁদের বয়ান তদন্তের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা।
২০১১ সালে তৃণমূল সরকারে আসার পর প্রথম স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান পদে আসীন হন চিত্তরঞ্জন মণ্ডল। তাঁকেও এ দিন তলব করা হয়। তবে নিজাম প্যালেসে আসার আগেই সংবাদ মাধ্যমের সামনে বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস করেন চিত্তরঞ্জন মণ্ডল। তিনি জানান যে, তাঁর চাকরির মেয়াদের দু’বছরে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীরা তাঁকে চাপ দিতেন। এমনকী নেতা-মন্ত্রীদের গাড়ির চালকরা তাঁর কাছে চিরকুট নিয়ে আসতেন, সেই মতো চাকরি দেওয়ার বিষয়টি জানানো হতো। চিত্তরঞ্জন মণ্ডলের অভিযোগ, সেই সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী না থাকলেও তৃণমূলের মহাসচিব পদে ছিলেন। এবং পার্থবাবুই তাঁকে বলেছিলেন যাতে তিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। সেই মতো কোনও কারণ না দর্শিয়েই চিত্তরঞ্জনবাবু চাকরি ছাড়েন।
এ দিন নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে চিত্তরঞ্জন মণ্ডল বলেন, “নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু তথ্য জানার জন্য আমায় ডাকা হয়েছিল।”
উল্লেখ্য, এ দিকে আজ ফের চাকরির দাবিতে পথে সংঘবদ্ধ হয়ে পথে নেমেছেন গ্রুপডি, এসএলএসটি চাকরি প্রার্থীরা। শিয়ালদহ স্টেশনের কাছে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা। আন্দোলনকারীদের মঞ্চে উপস্থিত রয়েছেন সমাজকর্মী মীরাতুন নাহারও। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে কোনও সরকার নেই। এখানে রয়েছে এক দলীয় শাসকদল। তাদের বিরোধীতা করার মতো কেউ নেই। আর বিরোধী দলগুলির সংঘবদ্ধ হওয়ার ক্ষমতা নেই। সেই কারণে এই সুযোগককে কাজে লাগিয়ে তারা মানুষকে তাঁদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। বিশেষ করে শিক্ষাক্ষেত্রে বঞ্চিত যাঁরা, তাঁদের সঙ্গে আমি হাঁটব।”